যাত্রীর চাপে উধাও স্বাস্থ্যবিধি, ফেরিতে লাগছে বেশি সময়
Published : Sunday, 18 July, 2021 at 11:50 AM, Count : 1655

মুন্সিগঞ্জ প্রতিনিধি: ঈদুল আজহার আর মাত্র বাকি তিন দিন। তাই নাড়ির টানে বাড়ি যেতে দেশের দক্ষিণবঙ্গের ২১ জেলার ঘরমুখো মানুষ ভিড় করছেন মুন্সিগঞ্জের শিমুলিয়াঘাটে। রোববার সকাল থেকেই ঢাকাসহ বিভিন্ন প্রান্ত থেকে ঘাটে এসে ফেরি ও লঞ্চে পদ্মা পাড়ি দিচ্ছেন।

অর্ধেক যাত্রী ধারণের কথা থাকলেও অধিক যাত্রী নিয়ে লঞ্চ চলাচল করছে। লঞ্চে চাপ থাকায় ফেরিতেও ভিড় করছেন যাত্রীরা। ঈদযাত্রায় যাত্রীদের হুড়োহুড়িতে উপেক্ষিত থাকছে স্বাস্থ্যবিধি ও সামাজিক দূরত্ব। অনেকের মুখে নেই মাস্ক।

এদিকে, পদ্মার তীব্রস্রোত, মানুষ ও গাড়ির চাপ বাড়ায় ফেরিতে যানবাহন পারাপারে বেগ পেতে হচ্ছে। নদী পারের অপেক্ষায় ঘাটে অবস্থান করছে পাঁচশতাধিক ব্যক্তিগত গাড়ি ও পণ্যবাহী ট্রাক। এছাড়া ঘাটের অভিমুখে ঢাকা-মাওয়া এক্সপ্রেসওয়েতে পারাপারের অপেক্ষায় শতশত পণ্যবাহী ট্রাক। ঘাট কর্তৃপক্ষ সূত্রে জানা গেছে, যানবাহন ও যাত্রী পারাপারে নৌরুটে বর্তমানে ১৪টি ফেরি ও ৮৩টি লঞ্চ সচল রয়েছে।

সরজমিনে গিয়ে দেখা যায়, ঘাটে লঞ্চ নোঙরের সঙ্গে সঙ্গে যাত্রীরা হুমড়ি খেয়ে উঠছে, কর্তৃপক্ষ থেকে স্বাস্থ্যবিধির বিষয়ে উৎসাহ-আহ্বানে ভ্রূক্ষেপ নেই যাত্রীদের। কে কার আগে নৌযানে উঠবে সে প্রতিযোগিতায় ন্যূনতম সামাজিক দূরত্ব উধাও। লঞ্চে বাড়তি যাত্রীর চাপে অনেক যাত্রী ফেরিতেও নদী পাড়ি দিচ্ছে। এতে ফেরিতে বেড়েছে যাত্রীদের উপস্থিতি। তিন ও দুই নম্বর ফেরিঘাটের পার্কিং ইয়ার্ডে যানবাহনের দীর্ঘ সারি। ঘাটের অভিমুখে ঢাকা-মাওয়া এক্সপ্রেসওয়ের দোগাছি এলাকায় হয়ে শ্রীনগরের সমশপুর এলাকায় কয়েক কিলোমিটার জুড়ে শতশত পণ্যবাহী ট্রাকের দীর্ঘ সারি রয়েছে। যাত্রীরা জানান, সবকিছু শেষে ঈদ পরিবারের সঙ্গে কাটবে। এটিই এখন প্রধান লক্ষ্য তাদের।

বরিশালগামী যাত্রী জান্নাত আরা বলেন, ‘ঢাকায় একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে কাজ করি। গত ঈদে বাড়ি যেতে পারিনি। বছরে মাত্র দুটি ঈদ, তাই এবার ছুটিতে বাড়ি যেতেই হবে। বাবা-মা ছোট ভাই আছে।’

কেরানীগঞ্জ থেকে মাধারীপুরগামী আরেক যাত্রী ফজলুল হক বলেন, ‘করোনা তো বছর ভরেই থাকে, ঈদতো বছর ভরে থাকে না। এত পরিশ্রম পরিবারের জন্য, সন্তানদের জন্য। ঈদে যদি বাড়ি না যাই তবে আমারও খারাপ লাগবে তাদেরও খারাপ লাগবে।’

আরেক যাত্রী মনির হোসেন বলেন, ‘ভোর ৫টায় গাড়ি নিয়ে ঘাটে আসছি। এখন ৯টা বাজে। এখনো ঘাটেই অপেক্ষা করতে হচ্ছে। ফেরি খুব কম গাড়ি টানছে।’ গোপালগঞ্জ গামী যাত্রী রবিউল আলম বলেন, ‘সন্তানরা দাদা-দাদির সঙ্গে ঈদ করবে, এটাই আনন্দ। তবে অনেক মানুষ, কে করোনা পজিটিভ তা বলা মুশকিল। সবাই ঝুঁকিতে আছি। ভিড় ঠ্যালে না উঠলে লঞ্চে ওঠা মুশকিল। তাই সবাইকে একভাবেই উঠতে হচ্ছে। সবচেয়ে বড় কথা হলো বাড়ি যেতে পারছি, সন্তানরা খুশি আমারও খুশি।’

এ বিষয়ে বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন করপোরেশনের (বিআইডব্লিউটিসি) শিমুলিয়াঘাটের সহকারী উপ-মহাব্যবস্থাপক শফিকুল ইসলাম জানান, নৌরুটে বর্তমানে ১৪টি ফেরি সচল রয়েছে। ঘাট এলাকায় পারাপারের জন্য যাত্রী ও পণ্যবাহী মিলিয়ে পাঁচশতাধিক যানবাহন রয়েছে। পর্যায়ক্রমে সকল যানবাহন পারাপার করা হবে।’

বিআইডব্লিউটিসি শিমুলিয়াঘাটের মেরিন কর্মকর্তা জানান, নদীতে পানি বৃদ্ধি ও তীব্র স্রোতের কারণে শিমুলিয়া থেকে বাংলাবাজার ঘাটে যেতে ফেরিগুলোর দ্বিগুণ সময় লাগছে। প্রতিটি ফেরিকে স্রোতের বিপরীতে ও নদীতে ৩-৪ কিলোমিটার অধিক পথ ঘুরে যেতে হচ্ছে। স্রোতের বিপরীতে চলাচলে সক্ষমতা না থাকা তিনটি ফেরি বন্ধ রয়েছে।



« পূর্ববর্তী সংবাদপরবর্তী সংবাদ »


সর্বশেষ সংবাদ
সর্বাধিক পঠিত
সম্পাদক ও প্রকাশক: আলহাজ্ব মিজানুর রহমান, উপদেষ্টা সম্পাদক: এ. কে. এম জায়েদ হোসেন খান, নির্বাহী সম্পাদক: নাজমূল হক সরকার।
সম্পাদক ও প্রকাশক কর্তৃক শরীয়তপুর প্রিন্টিং প্রেস, ২৩৪ ফকিরাপুল, ঢাকা থেকে মুদ্রিত।
সম্পাদকীয় ও বাণিজ্যিক কার্যালয় : মুন গ্রুপ, লেভেল-১৭, সানমুন স্টার টাওয়ার ৩৭ দিলকুশা বাণিজ্যিক এলাকা, ঢাকা-১০০০ থেকে মুদ্রিত।, ফোন: ০২-৯৫৮৪১২৪-৫, ফ্যাক্স: ৯৫৮৪১২৩
ওয়েবসাইট : www.dailybartoman.com ই-মেইল : [email protected], [email protected]
Developed & Maintainance by i2soft