শিরোনাম: |
আজ আমাদের আনন্দের দিন: স্বাস্থ্যমন্ত্রী
|
বর্তমান প্রতিবেদক: সারাদেশে করোনাভাইরাসের গণ টিকাদান শুরুর দিন টিকা নিয়েছেন সরকারের বেশ কয়েকজন মন্ত্রী এবং জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা। স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক রোববার সকালে মহাখালী স্বাস্থ্য ভবনে ভার্চুয়ালি টিকাদান কার্যক্রমের উদ্বোধন করেন। পরে শেখ রাসেল জাতীয় গ্যাস্ট্রোলিভার ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালে গিয়ে নিজে টিকা নেওয়ার সময় তিনি বলেন, আজ আমাদের আনন্দের দিন। এই দিনের অপেক্ষায় ছিলাম। এই টিকা নিয়ে যেন কোনো রিউমার না হয়। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সম্মেলনকক্ষে সারা দেশে টিকাদান উদ্বোধনের সময় স্বাস্থ্যমন্ত্রীর সঙ্গে ভিডিও কনফারেন্সে কথা বলেন শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনি, গাজীপুর সিটি করপোরেশনের মেয়র জাহাঙ্গীর আলম ও সাবেক খাদ্যমন্ত্রী কামরুল ইসলাম। এ সময় বিভিন্ন জেলায় টিকাদান কার্যক্রমে জড়িত কর্মকর্তাদের সঙ্গেও কথা বলেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক। এর পরপরই বিভিন্ন জেলায় টিকাদান কার্যক্রম শুরু হয়।
পরে বেলা সোয়া ১১টার দিকে শেখ রাসেল জাতীয় গ্যাস্ট্রোলিভার ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালে যান স্বাস্থ্যমন্ত্রী। কৃষিমন্ত্রী আবদুর রাজ্জাক, প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী শ ম রেজাউল করিম, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিমন্ত্রী ইয়াফেস ওসমান, জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী ফরহাদ হোসেন, বিএমএ সভাপতি ডা. মোস্তফা জালাল মহিউদ্দিন, স্বাচিপ সভাপতি অধ্যাপক ডা. ইকবাল আর্সলান সেখানে টিকা নেন। নিজে টিকা নেওয়ার আগে স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, গত বছরের ৮ মার্চ প্রথম রোগী শনাক্ত হওয়ার পর থেকে করোনাভাইরাসের ভাইরাসের বিরুদ্ধে এই ‘যুদ্ধ’ শুরু হয়। করোনাভাইরাস প্রতিরোধে আমরা নানা কার্যক্রম শুরু করি। আমাদের কার্যক্রম নিয়ে নানা সমালোচনা হয়েছে। আমরা সমালোচনার ঊর্ধে উঠে কাজ করে গেছি। আজ বাংলাদেশ অনেক দেশের চেয়ে ভালো আছে। আমাদের জীবনযাত্রা স্বাভাবিক। জাহিদ মালেক দাবি করেন, এ পর্যন্ত যত টিকা তৈরি হয়েছে, তার মধ্যে অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকার টিকা কোভ্যাক্স থেকে আরও টিকা চলে আসবে। টিকাদান কার্যক্রম সারা বছর ধরে চলবে। আমরা চাই দেশবাসী স্বাভাবিক জীবনে চলে আসুক। টিকা নিয়ে কোনো সমালোচনা চাই না। দেশবাসীর জীবন রক্ষার্থে এই টিকা দেওয়া হচ্ছে। আমরা নিজেরা নিচ্ছি, দেশের অনেক গুরুত্বপূর্ণ মানুষ টিকা নিচ্ছেন, তাদের দেখে সাধারণ মানুষ উৎসাহিত হচ্ছে। জাহিদ মালেক বলেন, দেশে করোনাভাইরাস সংক্রমণের এক বছর পূর্তি হওয়ার আরও এক মাস আছে। এর আগেই করোনাভাইরাস সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে এসেছে। গতকাল সংক্রমণের হার ছিল ২ শতাংশের কিছু বেশি। বিশ্বস্বাস্থ্য সংস্থার প্রটোকল অনুযায়ী, এই ধারা চলতে থাকলে সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে আছে বলা যায়। এ কারণে আমরা আমাদের লক্ষ্যে পৌঁছেছি। আমরা আশা করি করছি করোনাভাইরাস দূর হয়ে যাবে। ফাইনাল ব্লো-টা আমরা দিব ভ্যাকসিনের মাধ্যমে। টিকা নেওয়ার পর কৃষিমন্ত্রী আবদুর রাজ্জাক বলেন, করোনাভাইরাস মহামারী সারাবিশ্বে ছড়িয়ে পড়েছে। এর বিরূপ প্রভাব বাংলাদেশসহ সারা বিশ্বেই পড়েছে। করোনাভাইরাসের টিকা এই মহামারীর বিরুদ্ধে মানবজাতির একটা বড় অর্জন। এই অর্জন বিজ্ঞান-প্রযুক্তি ব্যবহার করে হয়েছে। আমি টিকা নেওয়ার পর ভালোই আছি। টিকা নিয়ে যারা গুজব ছড়াচ্ছে তারা উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে তা করছে। পুরো বিশ্ব টিকা নিচ্ছে, কিছু না কিছু উপকারিতা তো আছেই। শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটের সমন্বয়ক অধ্যাপক ডা. সামন্ত লাল সেনও এদিন শেখ রাসেল জাতীয় গ্যাস্ট্রোলিভার হাসপাতালে গিয়ে টিকা নেন। টিকা নিলাম প্রায় ১০ মিনিট হল। আমি প্রথমেই মাননীয় প্রধানমন্ত্রীকে ধন্যবাদ জানাই। টিকা নেওয়ার পর মনে হচ্ছে আমি যেন সাহস পেলাম। আমি মনে করি টিকা নেওয়ার পরও সাবধানে থাকতে হবে। বাংলাদেশে দেওয়া হচ্ছে ভারতের সেরাম ইনস্টিটিউটে তৈরি অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকার করোনাভাইরাসের টিকা। সবাইকে এ টিকার দুটি ডোজ নিতে হবে। এই টিকার তিন কোটি ডোজ পেতে সেরাম ইনস্টিটিউটের সঙ্গে চুক্তি হয়েছে বাংলাদেশের, যার মধ্যে ৫০ লাখ ডোজ হাতে পাওয়ার পর জেলায় জেলায় পৌঁছে দেওয়া হয়েছে আগেই। এছাড়া ভারত সরকারের উপহার হিসেবে পাওয়া গেছে আরও ২০ লাখ ডোজ টিকা। জাতীয়ভাবে কোভিড-১৯ টিকা বিতরণ ও প্রস্তুতি পরিকল্পনা অনুযায়ী, তিন ভাগে (ফেইজ) মোট পাঁচ ধাপে এসব টিকা দেওয়া হবে। কোভিড-১৯ মহামারী প্রতিরোধে সামনের কাতারে থাকা মানুষ প্রাধান্য পাবেন। প্রথম দিনে ঢাকাসহ সারা দেশে ১০১৫টি হাসপাতাল ও স্বাস্থ্যকেন্দ্রে টিকা দেওয়া হচ্ছে, যার মধ্যে ঢাকায় রয়েছে ৫০টি কেন্দ্র। সোমবার থেকে প্রতিদিন সকাল ৮টা থেকে বেলা আড়াইটা পর্যন্ত এসব কেন্দ্রে টিকা দেওয়া হবে। |