শিরোনাম: |
বেগমগঞ্জ পৌরসভা নির্বাচনে নৌকার বিজয় ঠেকাতে মাঠে আওয়ামী লীগের এমপি পরিবার
|
নোয়াখালী প্রতিনিধি: আগামী ৩০ জানুয়ারি নোয়াখালীর বেগমগঞ্জ পৌরসভার অনুষ্ঠিতব্য নির্বাচনে আওয়ামী লীগের নৌকা প্রতীকের দলীয় প্রার্থী আক্তার হোসেন ফয়সলের বিরুদ্ধে মোবাইল প্রতীক নিয়ে নির্বাচন করছেন স্থানীয় এমপি মামুনুর রশিদ কিরনের ভাই খালেদ সাইফুল্লাহ। গত ১৬ জানুয়ারি এমপির সহধর্মীনি ও উপজেলা মহিলা লীগের সভানেত্রী (বেগমগঞ্জ) জেসমিন আক্তার তার ভাসুর সাইফুল্লাহের পক্ষে নির্বাচনী এলাকায় ভোট চাওয়ার ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে। এমপি কিরনের অনুসারীদের এলাকায় আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে মোবাইল ফোন মার্কায় প্রচার-প্রচারণা চালাতে দেখা গেছে। খালেদ সাইফুল্লাহ প্রধানমন্ত্রীর ভিডিও ক্লিপ বাজিয়ে এলাকায় মোবাইল ফোন মার্কায় প্রচারণা চালাচ্ছেন।
এবিষয়ে বেগমগঞ্জ পৌর আওয়ামী লীগে সাধারণ সম্পাদক আবু বকর ছিদ্দিক টিপু বলেন, তৃণমূল নেতাকর্মীরা মনে করেন এমপি সাহেব আসলেই চান না নির্বাচনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী জিতুক। তিনি বর্তমানে উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক থেকে এখানে পৌরসভা ভোটে তার ভাইকে সাহায্য করছেন। যা আওয়ামী লীগের জন্য বড় সমস্যার কারণে হয়ে দাড়াতে পারে। তাই দ্রুত এ অবস্থা নিরসনের জন্য কেন্দ ীয় নেতাদের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি। অনেকে আবার বলেছেন, একটি ব্যবসায়ী পরিবার এভাবে প্রার্থী দিয়ে টাকা ছিটিয়ে আ.লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সিদ্ধান্তকে চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে দিচ্ছে। অনেকে বলছেন, বিএনপির প্রার্থী জহির উদ্দিন হারুন-এর ধানের শীষ জেতানোর মিশনে নেমেছেন আওয়ামী লীগের এমপি কিরণ। এলাকায় অনেকে বলছেন, এমপি নিজেই তার বড় ভাইকে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে দাড় করিয়েছে।যাতে এলাকায় তাদের ওপরে কেউ কথা না বলতে পারে। বিএনপির ধানের শীর্ষ প্রতীকের প্রার্থী জহির উদ্দিন হারুণের সঙ্গে এবিষয়ে কথা হলে তিনি বলেন, খালেদ সাইফুল্লাহ একজন চাকরিজীবী মানুষ ছিলেন। তিনি এলাকায় খুবই একটা মানুষের সঙ্গে মিশতেন না। তার সঙ্গে আমার কোনো যোগাযোগ বা পূর্ব পরিচয় নেই। তাছাড়া এমপি পরিবারের কোনো সদস্যের সঙ্গেও আমার যোগাযোগ নেই। সেখান তাদের কাছ থেকে আর্থিক সুবিধা বা নির্বাচনে বিজয়ের ব্যাপারে সুবিধা আদায় করার তো প্রশ্নই উঠে না। এটা স্থানীয় আওয়ামী লীগের প্রপাগান্ডা ও নিজস্ব অন্তকোন্দলের ফল। আওয়ামী লীগের নৌকা প্রতীকের প্রার্থী ও বর্তমানে পৌরসভার মেয়র আক্তার হোসেন ফয়সল প্রতিবেদককে বলেন, বঙ্গবন্ধু কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পরিস্কার ভাবে বলেছেন, বিদ্রোহীরা জয়ী হোক কিংবা পরাজিত হোক, পরবর্তী নির্বাচনে আর মনোনয়ন পাবে না। এটাই আওয়ামী লীগের চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত। এমপি সাহেব তার পরিবারের সদস্যের জন্য মনোনয়ন চেয়েছেন কিন্তু সেটা না পেয়ে তিনি স্বতন্ত্র হিসেবে তার বড় ভাইকে নির্বাচনে দাঁড় করিয়ে দিয়ে কেন্দ ীয় আওয়ামী লীগের সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করেছেন। যা পরিস্কার হয়েছে তার (এমপি মামুনুর রশিদ কিরন) স্ত্রী ও উপজেলা মহিলা লীগের সভানেত্রী (বেগমগঞ্জ) জেসমিন আক্তারের প্রচারণার মধ্য দিয়ে। আমি এব্যাপারে কেন্দ ীয় নেতাদের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি। তিনি আরও বলেন, নেত্রীর সিদ্ধান্তকে অবজ্ঞা করে প্রার্থী দেয়া ও তার পক্ষে উপজেলা মহিলা লীগ নেত্রীর প্রচারণা চালানো আওয়ামী লীগের দলীয় শৃঙ্খলার সুস্পষ্ট লঙ্ঘন। আমি তাদের ব্যাপারে দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানাই। দলীয় নেতাকর্মীরা আমার সঙ্গে আছেন। বেগমগঞ্জে নৌকার বিজয়ী সুনিশ্চিত মনে করেন আক্তার হোসেন ফয়সল। এ বিষয়ে এমপি মামুনুর রশিদ কিরনের মোবাইলে ফোন করে তাকে পাওয়া যায়নি।ম্যাসেঞ্জারে বিস্তারিত বিষয় জানিয়ে ম্যাসেজ পাঠালেও এই রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত কোনো জবাব মেলেনি। উল্লেখ্য, ২০০৮ সালের নির্বাচনে মামুনুর রশিদ কিরণ নিজেও নৌকার প্রার্থীর বিরুদ্ধে দোয়াত কলম মার্কায় ভোট করে বিএনপিকে জেতার পথ করে দেন। অথচ আক্তার হোসেন ফয়সাল বাংলাদেশ আওয়ামী শ্রমিক লীগের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি মরহুম জননেতা নুরুল হক (তিনবার সংসদ সদস্য) এর দৌহিত্র। নোয়াখালীর বিশিষ্ট সমাজসেবক মরহুম ইঞ্জিনিয়ার দেলোয়ার হোসেনের ছেলে। আক্তার হোসেনের মাতা একজন রত্নগর্ভা মা।নগর ছাত্রলীগের মাধ্যমে আওয়ামী রাজনীতি শুরু ছোটবেলা থেকেই এবং তিনি সংগঠনের দুঃসময়ে দুই দুইবার নোয়াখালী জেলা যুবলীগের সফল সভাপতি ছিলেন। বর্তমানে তিনি পৌর আওয়ামীলীগের সভাপতি। আক্তার হোসেন ফয়সাল গত ২ বার বিপুল ভোটের ব্যবধানে বি এন পির দুর্গের মধ্যে চৌমুহনী পৌর সভার মেয়র নির্বাচিত হয়েছিলেন। এইবার নিয়ে তৃতীয় বার বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের নৌকার নমিনেশন নিয়ে মাঠে ভোট করছেন। |