শিরোনাম: |
হলুদ ফুলের হাসি দেখতে চাইলে
|
নরসিংদী- মাইলের পর মাইল, দিগন্তজোড়া সর্ষে ক্ষেতের জন্য ইতোমধ্যেই নরসিংদীর চান্দেরপাড়া ভ্রমণকারীদের নজর কেড়েছে। ঢাকা থেকে গেলে সময় লাগবে ২ ঘণ্টার মতো। যাওয়ার পথটাও সহজ। গুলিস্তান বা মহাখালী থেকে নরসিংদীর বাসে উঠুন। নরসিংদী নেমে রিকশা নেবেন সাটিরপাড়া রজনীগন্ধার মোড় পর্যন্ত। এখান থেকে ইজিবাইকে চান্দেরপাড়া। যেতে যেতেই দূর থেকে চোখে পড়বে হলুদ রঙের ক্ষেতগুলো। এত ফুল যে আপনি ডুবে যাবেন নিশ্চিত। আর সর্ষে ডুব শেষে ঘুরে আসতে পারেন মেঘনা নদীতে নৌকায়। সেটাও অন্যরকম এক আনন্দ দেবে আপনাকে। সুতরাং আর দেরি কেন? আজ নেমে পড়ুন হলুদের সমুদ্র স্নানে। কেরানীগঞ্জ- শীতে এই সময়ে কেরানীগঞ্জের গ্রামগুলোতে পাবেন সরিষা ক্ষেত। তবে এখানে মাইলের পর মাইল সরিষা চাষ হয় না। যার যার নিজস্ব জায়গায় সুবিধা মতো এর আবাদ হয়। তবে কেরানীগঞ্জের এক ভ্রমণে আপনার আরও দেখা হয়ে যাবে ফুলকপি, লাল শাক, ধনে পাতার ক্ষেত। কেরানীগঞ্জের অবস্থান ঢাকার ভেতরেই। প্রথমে যেতে হবে মোহাম্মদপুর। এখান থেকে বসিলার বাসে উঠে নামবেন আঁটিবাজারে। এখানে অটো পাবেন। আবার গুলিস্তান দিয়েও যাওয়া যায়। ওখানেও কেরানীগঞ্জের গাড়ি পাবেন। সেখান থেকে যে কোনো অটোতে বা কাউকে জিজ্ঞেস করলেও পাবেন সরিষার সন্ধান। অথবা আঁটিবাজারের যে কাউকে সরিষা ক্ষেতে যেতে চান বললেই নিয়ে যাবে। তবে অবশ্যই স্থানীয় কারও অটোতে উঠবেন। এখানে বাংলানগর, রোহিতপুরে ইত্যাদি গ্রামে আছে সরিষা ক্ষেত। বেজেরহাটি- মুন্সিগঞ্জেও পাবেন ক্ষেতের পর ক্ষেত সরিষা ফুলের দেখা। চোখ ধাঁধানো ফুলের এই সাম্রাজ্য দেখতে গুলিস্তান থেকে মুন্সিগঞ্জের বাসে উঠুন। মুন্সিগঞ্জে নেমে যে কাউকে জিজ্ঞেস করে চলে যান কাছাকাছি গ্রামে। যেতে পারেন সিরাজদিখানের বেজেরহাটি! মুন্সিগঞ্জের বাসে উঠে সিরাজদিখান নেমে যাবেন। বাকি পথ অটোতে। নন্দনকোন- মুন্সিগঞ্জের শ্রীনগরে অবস্থিত জায়গাটি। সরিষা ফুলে মোড়ানো গ্রামগুলোর মাঝে নন্দনকোন অর্জন করেছে আলাদা খ্যাতি। এখানে যেতে হলে বাবুবাজার ও ধলেশ্বরী জোড়া সেতু পেরিয়ে নিমতলী আসবেন। নিমতলী থেকে সাতগাঁও যাওয়ার পথে পড়বে নন্দনকোনের সর্ষে ক্ষেত। স্থানীয়দের সাহায্য নিতে পারেন পথ চিনতে। সোনারঙ- সোনারঙের অবস্থানও মুন্সিগঞ্জে, টঙ্গিবাড়িতে। যেমন নাম তেমনই রূপে ঝলমল করছে এখন সোনারঙের সোনালি সর্ষে ক্ষেত। গুলিস্তান থেকে বাসে যেতে পারবেন টঙ্গিবাড়ি। সিঙ্গাইর- সরিষা ফুলের সুগন্ধে নিজেকে হারিয়ে ফেলতে চাইলে আপনার জন্য আরেকটি চমত্কার গন্তব্য হতে পারে মানিকগঞ্জের সিঙ্গাইর। গুলিস্তান থেকেই পাচ্ছেন সরাসরি মানিকগঞ্জের বাস। সিঙ্গাইরে নামুন। এখান থেকে সিএনজি বা মোটরসাইকেলে চলে যান গ্রামের দিকে। ঝিটকা- এই জায়গাটিও মানিকগঞ্জে। আঁকাবাঁকা মেঠোপথ, দুইদিকে যতদূর চোখ যায় হলুদ সমুদ্র। ঝিটকা ভ্রমণ মনে দাগ কাটবে সন্দেহ নেই। এখানে অসংখ্য খেজুর গাছও আছে। তাই যদি খুব ভোরে যেতে পারেন তাহলে পেয়ে যাবেন খেজুরের রস। ধামরাই- সরিষা ফুলের সোনালি একটি বিকেল পেতে চলে যান ধামরাই। গুলিস্তান, মহাখালী, গাবতলী যে কোনো জায়গা থেকে উঠুন সাভার ধামরাইয়ের বাসে। ধামরাই থেকে লেগুনায় ইসলামপুর। এখানেই দেখা মিলবে সরিষা ফুলের। মাওয়া রোড- ঢাকা থেকে মাওয়া রোড ধরে বাসে যাওয়ার পথে কখনো কি খেয়াল করেছেন রাস্তার দু’পাশের সরিষা ক্ষেতগুলো? সোনালি রঙ জ্বলজ্বল করে এখানে, দূর থেকে কাছে টানতে থাকে চুম্বকের মতো। নেমে পড়ুন না! ঘুরে আসুন এখান থেকেই। আব্দুল্লাহপুর, শাইনপুকুর বা লৌহজং যেদিকেই যান না কেন ফুল পাবেন এই সময়ে। এছাড়াও- গাজীপুর হয়ে টাঙ্গাইল এবং জামালপুর বা উত্তরবঙ্গে যাওয়ার পথে পথে চোখ আটকে যাবে সারি সারি সরষের আবাদ দেখে। নিজস্ব বাহন নিয়ে গেলে এসব সর্ষে ক্ষেতে আপনি সাতারও কাটতে পারবেন। তাহলে আর দেরি কেন? আপনার জন্য সুবিধাজনক একটি জায়গা বেছে নিন আর নতুন বছরের শুরুটা সোনালি-হলুদ রঙে রাঙিয়ে দিতে চলে যান প্রিয়জনের হাত ধরে। শুভ হোক আপনার ভ্রমণ। - অনিন্দ্য তাওহীদ |