শিরোনাম: |
বৈশ্বিক উষ্ণতায় গ্রিন হাউস গ্যাসের প্রভাব
|
রাহাত মাহমুদ : জলবায়ু পরিবর্তনজনিত কারণে বৈশ্বিক তাপমাত্রা বৃদ্ধি পাচ্ছে। বৈশ্বিক তাপমাত্রা বৃদ্ধির জন্য গ্রিন হাউস গ্যাসকে দায়ী করা হচ্ছে। মজার বিষয় হচ্ছে, গ্রিন হাউস গ্যাসগুলো ক্ষতিকর নয় বরং তাদের অতিরিক্ত পরিমাণ উপস্থিতিই ক্ষতিকর। গ্রিন হাউস গ্যাস বলতে কার্বন ডাই-অক্সাইড, মিথেন, নাইট্রাস অক্সাইড, ফ্লোরিনেটেড গ্যাস ইত্যাদিকে বুঝানো হয়ে থাকে। সূর্য হতে নির্গত আলোক রশ্মি (সাধারণত ক্ষুদ্র তরঙ্গ দৈর্ঘ্য বিশিষ্ট আলোক রশ্মি) গ্রিন হাউস গ্যাসসমূহের মধ্যে দিয়ে পৃথিবীপৃষ্ঠে আপতিত হয়। আপতিত আলোক শক্তির কিছু অংশ মহাশূন্যের দিকে ফেরত যাওয়ার সময় গ্রিন হাউস গ্যাস বিশেষ করে কার্বন ডাই-অক্সাইড কর্তৃক শোষিত হয়। কার্বন ডাই-অক্সাইডের পরিমাণ যত বৃদ্ধি পাবে, পৃথিবীর উষ্ণতা ততই বৃদ্ধি পাবে। আধুনিক বিশ্বে শিল্প-কারখানা, যানবাহন ব্যবস্থা, অধিক জনসংখ্যা, বন উজারকরণ ইত্যাদি কারণে বায়ুমণ্ডলের তাপমাত্রা বৃদ্ধির জন্য দায়ী গ্রিন হাউস গ্যাসগুলোর মধ্যে কার্বন ডাই-অক্সাইডের মাত্রা প্রায় প্রতিবছরই বৃদ্ধি পাচ্ছে। বৈশ্বিক গ্রিন হাউস গ্যাস নির্গমনের প্রায় ৭০ শতাংশ হলো কার্বন ডাই-অক্সাইড। ২০১২-১৩ সালে বায়ুমণ্ডলে এই গ্যাসটির নির্গমন হয়েছে ১৯৮৪ সালের পর সবচেয়ে দ্রুত হারে। আর ২০১৫ সালের প্রথমের দিকেই বায়ুমণ্ডলে এই গ্যাসের ঘনমাত্রা ৪০০ পিপিএম (পার্টস পার মিলিয়ন) ছাড়িয়ে যায় বলে বিশ্ব আবহাওয়া সংস্থা (ডব্লিউএমও) কর্তৃক বলা হয়। বায়ুমণ্ডলে কার্বন ডাই-অক্সাইডের গড় পরিমাণ ৪০৩.৫৭ পার্টস পার মিলিয়নে পৌঁছায়। ডব্লিউএমও মহাসচিবের মতে, আমরা ৪০০ পিপিএম কার্বন ডাই-অক্সাইডের স্থায়ী ঘনমাত্রা বিশিষ্ট বায়ুমণ্ডলের মধ্যে বাস করতে যাচ্ছি। এই গ্রিন হাউস গ্যাসের মাত্রা বৃদ্ধি, পৃথিবীর জন্য বড় ধরনের হুমকি। বায়ুমণ্ডলে এই গ্যাসের ঘনমাত্রা যত বৃদ্ধি পাবে, জলবায়ুর পরিবর্তন তত বেশি পরিলক্ষিত হবে। পৃথিবী এবং ভবিষ্যত্ প্রজন্মকে টিকিয়ে রাখতে হলে, বৈশ্বিক তাপমাত্রা বৃদ্ধি দুই ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে সীমিত রাখার প্রয়োজনীয়তার কথাও বলে আসছে বিশ্ব আবহাওয়া সংস্থা। এখন পর্যন্ত সৌরজগতে পৃথিবীই হলো একমাত্র গ্রহ, যার তাপমাত্রা জীবন ধারণের উপযোগী। আমাদের পাশের গ্রহ শুক্রের তাপমাত্রা অনেক গরম আর মঙ্গল গ্রহের তাপমাত্রা ঠাণ্ডা। শুক্র গ্রহের বায়ুমণ্ডল পুরু। মঙ্গল গ্রহে বায়ুমণ্ডল নেই বললেই চলে। মঙ্গল গ্রহের বায়ুমণ্ডল হালকা হওয়ায় সূর্য হতে আসা তাপের প্রায় পুরোটাই ফিরে যেতে পারে। অন্যদিকে, শুক্রের বায়ুমণ্ডল পুরু হওয়ায় তাপমাত্রা ধরে রাখে। পৃথিবীর জীবমণ্ডলে বাস্তুতন্ত্রের গতিশীলতা নিয়ন্ত্রণের জন্য একটি নির্দিষ্ট তাপমাত্রা-বিস্তার বা একটি গড় তাপমাত্রার একান্ত প্রয়োজন। পৃথিবীপৃষ্ঠে সৌর বিকিরণজনিত তাপশক্তির জোগান এবং উত্পাদনের ভারসাম্যের দ্বারা গড় স্বাভাবিক তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রিত হয়। কী পরিমাণ তাপশক্তি পৃথিবীতে এলো এবং পৃথিবীপৃষ্ঠ হতে কী পরিমাণ তাপশক্তি উদগীরিত হলো, তার ওপর নির্ভর করে পৃথিবীর তাপমাত্রা ভারসাম্য। সৌর বিকিরণের দৃশ্যমান বেগুনি হতে লাল রশ্মি এবং ক্ষুদ্র তরঙ্গ দৈর্ঘ্যের ইনফ্রারেড বা অবলোহিত রশ্মি পৃথিবীপৃষ্ঠে আপতনের ফলে পৃথিবীপৃষ্ঠ এবং এতদসংলগ্ন বায়ুমণ্ডল উত্তপ্ত হয়ে ওঠে। পরবর্তীতে, পৃথিবী এই তাপ ছেড়ে দেয়। প্রকৃতি তার নিজস্ব এই |