বৃহস্পতিবার ২৮ নভেম্বর ২০২৪ ১৩ অগ্রহায়ণ ১৪৩১
ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য দরকার কর্মমুখী শিক্ষা
Published : Tuesday, 11 July, 2017 at 6:00 AM, Count : 1486

রায়হান আহমেদ তপাদার : মেধা ও নৈতিকতার সমন্বয়ে ভবিষ্যত্ প্রজন্মকে গড়ে তুলতে হবে মানব জাতির জন্য একবিংশ শতাব্দীর সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ হলো মেধা ও নৈতিকতার সমন্বয়ে ভবিষ্যত্ প্রজন্মকে গড়ে তোলা। বর্তমান পৃথিবীতে মানুষ জ্ঞান-বিজ্ঞানের উত্কর্ষতার স্বর্ণ শিখরে পৌঁছলেও নৈতিক দিক থেকে সর্বনিকৃষ্টতার দিকে ধাবিত হচ্ছে।  প্রাথমিক শিক্ষার গুণগত মান উন্নয়নে জীবনমুখী শিক্ষাব্যবস্থা চালু করা এখন যুগের দাবি। শিক্ষা জীবনের শুরুতে প্রাথমিক স্তর থেকে কোমলমতি শিক্ষার্থীদের তত্ত্বীয় শিক্ষার পাশাপাশি ব্যবহারিক তথা হাতে-কলমে শিক্ষা পদ্ধতি চালু করা প্রয়োজন। শিশুদের জন্য এমন শিক্ষা ব্যবস্থা চালু করতে হবে, যা তাদের ভবিষ্যত্ কর্মজীবনে স্বনির্ভর হতে সহায়তা করে। জীবন ও জীবিকার প্রয়োজনে সেই শিক্ষা যেন কাজে লাগে। বর্তমানে প্রাথমিক স্তরে শিক্ষার্থীদের যা শেখানো হচ্ছে তা এক ধরনের গত্বাঁধা তাত্ত্বিক শিক্ষা ছাড়া আর কিছু নয়। শিশু শিক্ষার্থীদের কাছে স্কুল আনন্দদায়ক মনে হয় না। শুধু পুঁথিগত বিদ্যায় প্রাণের স্পন্দন জাগে না। শিক্ষা আনন্দময়। আনন্দঘন পরিবেশে শিশুদের পাঠদান সুনিশ্চিত করতে হবে। প্রাথমিক পর্যায়ে পাঠ্যক্রম বহুলাংশে শহর ও গ্রামাঞ্চলের দরিদ্র জনগোষ্ঠী আদিবাসী ও সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের জীবন ও জীবিকার সঙ্গে সংগতিপূর্ণ ও জীবনমুখী নয়। দেশপ্রেম, জাতীয়তাবোধ, শিষ্টাচার, নৈতিকতা, জীবনধর্মী বিষয়াদিসমৃদ্ধ ন্যূনতম পাঠ্যক্রম প্রণয়ন ও চর্চা একান্ত জরুরি। আমাদের সন্তানদের জন্য কী ধরনের শিক্ষা দরকার? এ প্রসঙ্গে রবীন্দ্রনাথ বলেছিলেন, জীবন যেমন হওয়া উচিত, শিক্ষাও তেমন হওয়া উচিত। জীবন ও শিক্ষা একই মুদ্রার এপিঠ-ওপিঠ। তাই জীবনের চাহিদা মেটাতে সক্ষম সে রকম শিক্ষা চাই। আলবার্ট আইনস্টাইন বলতেন, জ্ঞানের চেয়ে বড় হচ্ছে কল্পনাশক্তি। আইনস্টাইন খুব বড় মাপের বিজ্ঞানী ছিলেন, সত্যি কথা বলতে কী তিনি কত বড় বিজ্ঞানী সেটা বোঝার মতো বিজ্ঞানীও পৃথিবীতে খুব বেশি নেই। সেই আইনস্টাইন জ্ঞান থেকেও কল্পনাশক্তিকে বেশি গুরুত্ব দিয়েছেন তার নিশ্চয়ই একটি কারণ আছে। কারণটি সহজ, জ্ঞান অর্জন করা যায় কিন্তু কল্পনাশক্তি অর্জন করা যায় না। মানুষ কল্পনাশক্তি নিয়ে জন্মায়, সেই অমূল্য শক্তিকে খুব যত্ন করে লালন করতে হয়, তাকে বাঁচিয়ে রাখতে হয়। পৃথিবীতে সবচেয়ে মহান কাজগুলো হয়েছে এই কল্পনাশক্তির কল্যাণে।
ভবিষ্যতের স্বপ্ন দেখতে কল্পনাশক্তির দরকার, যাদের কল্পনাশক্তি নেই তাদের এই পৃথিবীকে দেয়ার কিছুই নেই। আমাদের দেশের শিক্ষাব্যবস্থা সেই কল্পনাশক্তি এবং সৃজনশীলতাকে পুরোপুরি নষ্ট করে দেয়। জীবনযুদ্ধে অবিরত সংগ্রামী মানুষের চাওয়া-পাওয়ার শেষ লক্ষ্য হচ্ছে এমন একটা আশ্রয়, যেখানে থাকবে না কোনো দ্বন্দ্ব্ব, সংঘাত বা কোনো ভেদাভেদ। শুধু থাকবে মানুষের প্রতি মানুষের ভালোবাসা আর শ্রদ্ধা। তাই মহাজ্ঞানীদের শিক্ষাদর্শনকে আঁকড়ে ধরে চলা আজ আমাদের বড় বেশি প্রয়োজন। তাত্পর্য এবং শিক্ষাদর্শ জগত্ কল্যাণের মূল দর্শন এবং এ সংসারে চলার মূল্যবান রসদ। তাদের প্রদর্শিত পথ যদি আমরা সত্যি অনুসরণ করতে পারি তাহলে আমরা হয়তো সুষ্ঠু ও সুন্দর সমাজ আশা করতে পারি।মানুষের সংজ্ঞা মানুষ নিজেই দিয়েছে। যার মধ্যে মান এবং হুঁশ আছে, সে-ই মানুষ। মান এবং হুঁশ ছাড়া তো মানুষ হতেই পারে না। বর্তমান শিক্ষা ব্যবস্থা মানুষের মনুষ্যত্ববোধকে কমিয়ে দিচ্ছে। আমাদের চারপাশে যে পরিবেশ, সে পরিবেশের দিকে চোখ খুলে তাকালেই আমরা তা সহজে উপলব্ধি করতে পারি। প্রচলিত বাক্য বিদ্যা বিনয় দান করে। কিন্তু বর্তমানে স্কুল-কলেজ থেকে যেসব ছেলেমেয়ে সসম্মানে বেরিয়ে আসছে বিভিন্ন ধরনের ডিগ্রি নিয়ে, তাদের মধ্যে বিনয়ের পরিবর্তে অহংকার, হামবড়া ভাব এবং উদ্ধত আচরণই আগামী ভবিষ্যত্ যে আমাদের আরও অন্ধকারে নিমজ্জিত হবে তারই ইঙ্গিত বহন করে। শিক্ষা মানুষকে আলো দেখাবে, সঠিক পথের দিশা দেখাবে, মানুষের মধ্যে সুপ্ত সুকুমার প্রবৃত্তি জাগিয়ে তুলবে এবং সৃষ্টিশীল কাজে চালিত করবে। শিক্ষা মানুষে মানুষে শ্রদ্ধা, ভক্তি, প্রেম ও ভালোবাসার কথা বলা এক সম্প্রদায়ের প্রতি অন্য সম্প্রদায়ের প্রীতির বন্ধন অটুট করে। প্রকৃত শিক্ষা মানুষের জীবন দর্শনের কথা বলে। শিক্ষাই একমাত্র প্রসাধন, যা মানুষকে পরিপূর্ণভাবে সুন্দর করতে পারে। একটা জাতির উন্নতির প্রথম শর্ত হচ্ছে শিক্ষা। আজকের সমাজে এটাই স্বাভাবিক ঘটনা। এখন কলমের খোঁচায় ২০-২৫ হাজার নয়, ২০-২৫ লাখ, এমনকি হাজার হাজার কোটি টাকা আত্মসাত্ করছে তারা। যারা আত্মসাত্ করছে তাদের নিন্দায় মুখর সমাজের ভদ্রলোক। কিন্তু তারা সংখ্যায় কম। প্রকৃতপক্ষে ওই ভদ্রলোকদের সংখ্যা খুব কম। তারা সমাজে সে রকম প্রভাব বিস্তার করতে পারছেন না, সঠিক নেতৃত্বও দিতে পারছেন না। আসলে সেটা হচ্ছে তাদের ব্যর্থতা। ওই ব্যর্থতার সুযোগ নিয়েছে সমাজের কিছু শিক্ষিত এবং দুষ্টু মনোবৃত্তির মানুষ। সমাজের দিকে তাকালেই আমরা দেখতে পাই বিচ্ছিন্নতাবাদ, সন্ত্রাসবাদীদের তা-ব নৃত্য, নারী নির্যাতন, অপহরণ, খুন, ধর্ষণ— এগুলো এখন নিত্যনৈমিত্তিক ঘটনা। এগুলো এখন মানুষের মনে আলোড়ন সৃষ্টি করে না। চোখ থেকেও অন্ধ। যদিও কান আছে শুনতে পায় না। প্রতিবাদের ভাষাও ধীরে ধীরে হারিয়ে ফেলছে। আসলে আজকের মানুষ বাকরুদ্ধ এবং সব দিক দিয়ে দিশেহারা। সমাজের অসহায় নিরীহ মানুষের জীবনযাত্রার কোনো নিশ্চয়তা নেই। সর্বত্রই একটা অস্থিরতা-অশান্তি। পৃথিবীটাকে দেখে মনে হয় এটা যেন একটা কসাইখানা। জীবনযুদ্ধে অবিরত সংগ্রামী মানুষের চাওয়া-পাওয়ার শেষ লক্ষ্য হচ্ছে এমন একটা আশ্রয়, যেখানে থাকবে না কোনো দ্বন্দ্ব্ব, সংঘাত বা কোনো ভেদাভেদ। শুধু থাকবে মানুষের প্রতি মানুষের ভালোবাসা আর শ্রদ্ধা। তাই মহাজ্ঞানীদের শিক্ষাদর্শনকে আঁকড়ে ধরে চলা আজ আমাদের বড় বেশি প্রয়োজন।
আসলে শিক্ষার তাত্পর্য এবং শিক্ষাদর্শ জগত্ কল্যাণের মূল দর্শন এবং এ সংসারে চলার মূল্যবান রসদ। তাদের প্রদর্শিত পথ যদি আমরা সত্যি অনুসরণ করতে পারি তাহলে আমরা হয়তো সুষ্ঠু ও সুন্দর সমাজ আশা করতে পারি। অবশ্য এ ব্যাপারে সমাজের সর্বস্তরের মানুষকে মহাপুরুষদের ভাবাদর্শে অনুপ্রাণিত হয়ে এগিয়ে আসতে হবে। আর তা না হলে ভবিষ্যত্ প্রজন্ম আরও গভীর অন্ধকারে নিমজ্জিত হওয়ার আশঙ্কা। এক্ষেত্রে ধর্মীয় শিক্ষার কথা আসে। ধর্মীয় শিক্ষা ছাড়া নৈতিক চরিত্রের উন্নয়ন কোনোভাবেই সম্ভব নয়। অধুনা শিক্ষাকে দুটো পর্যায়ে ফেলা হয়েছে: সাধারণ শিক্ষা ও বৃত্তিমূলক শিক্ষা। বৃত্তি হলো জীবিকা, কর্ম বা পেশা। বৃত্তির সঙ্গে প্রত্যক্ষভাবে সংশ্লিষ্ট শিক্ষাই বৃত্তিমূলক শিক্ষা। যে শিক্ষাব্যবস্থায় একজন শিক্ষার্থী হাতে-কলমে শিক্ষা লাভ করে জীবিকা নির্বাহ করতে পারে তাকে বলা হয় বৃত্তিমূলক শিক্ষা। বৃত্তিমূলক শিক্ষা ব্যক্তিকে কোনো না কোনো পেশার উপযোগী করে তোলে। সাধারণ পর্যায়ের বৃত্তিমূলক শিক্ষা বলতে বোঝায় কোনো বিষয়ের স্বল্পমেয়াদি ব্যবহারিক বা কর্মমুখি শিক্ষা। যেমন: কৃষিকাজ, দর্জির কাজ, রাজমিস্ত্রির কাজ, কাঠমিস্ত্রির কাজ, রঙের কাজ, সাইকেল, রিকশা ইত্যাদি মেরামতের কাজ, রেডিও, টেলিভিশন, ফ্রিজ ইত্যাদি বৈদ্যুতিক গৃহসামগ্রী মেরামতের কাজ, হাউস ওয়ারিং, বাস-ট্রাক ইত্যাদির চালকের কাজ, সাধারণ বা প্রাথমিক চিকিত্সার কাজ, কাপড় ইস্ত্রি, আধুনিক পদ্ধতিতে হাঁস-মুরগি পালন, গরু, ছাগল ও ভেড়ার খামার করা, মত্স্য চাষ, সেলুনের কাজ ইত্যাদি। এ ধরনের শিক্ষা অল্প সময়ে স্বল্প ব্যয়ে সহজেই গ্রহণ করা যায়। বর্তমানে বিশ্বায়নের যুগে মানুষ কৃষিতে, শিল্পে সর্বত্র বৈজ্ঞানিক জ্ঞান ও প্রযুক্তির ব্যবহার করছে। তাই এসব ক্ষেত্রে কাজ করতে গেলে বৃত্তিমূলক শিক্ষা অত্যাবশ্যক।বাংলাদেশের অর্থনীতির উন্নয়নের জন্য দরকার বৃত্তিমূলক শিক্ষায় শিক্ষিত লাখ লাখ কর্মঠ, উদ্যোগী যুবক। কৃষিতে, কুটিরশিল্পে, বৃহিশল্পে সর্বত্র উত্পাদন ও সেবার মান বৃদ্ধি এবং উন্নয়নের জন্য চাই বৃত্তিমূলক শিক্ষা। আজকের পৃথিবীতে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, ইউরোপের দেশগুলো এবং এশিয়ার চীন, জাপান, কোরিয়া, মালয়েশিয়া উন্নতি লাভ করেছে বৃত্তিমূলক শিক্ষার প্রসারের মাধ্যমেই।
উন্নত বিশ্বের জনসাধারণের মধ্যে বৃত্তিমূলক শিক্ষার প্রচলন ও গুরুত্ব অনেক বেশি। তারা সার্টিফিকেটে বিশ্বাসী নয়, কাজে বিশ্বাসী। তারা কোনো কাজকে খাটো করে দেখে না। তাই সেসব দেশে বৃত্তিমূলক শিক্ষার পর্যাপ্ত সুযোগ-সুবিধা রয়েছে।উন্নত দেশে শিক্ষা মানেই কাজ, চাকরি। তারা জীবন ও প্রয়োজন উপযোগী শিক্ষা লাভ করছে। তাদের পেশাভিত্তিক কারিগরি শিক্ষাই কাজের দিশা দেয়। প্রয়োগভিত্তিক শিক্ষা লাভের অভাবে আমাদের ছাত্ররা নিজের বা দেশের উন্নয়নে অবদান রাখতে ব্যর্থ হচ্ছে। হাইটেক বা অতি উন্নত প্রযুক্তির যুগে কোমলমতি শিক্ষার্থীদের কর্মমুখী ও জুতসই প্রযুক্তির শিক্ষা দিতে হবে। সিঙ্গাপুরের স্কুলগুলোতে প্রথম শ্রেণি থেকেই কম্পিউটারভিত্তিক শিক্ষার ব্যবস্থা করা হয়। সাধারণ শিক্ষার দিন এখন শেষ হয়ে গেছে। বৃত্তিমূলক শিক্ষা গ্রহণ করে জীবন সংগ্রামে ঝাঁপিয়ে পড়া ছাড়া গত্যন্তর নেই। কৃষিপ্রধান বাংলাদেশে প্রাথমিক স্তর থেকেই কৃষিশিক্ষাকে বাধ্যতামূলক করতে হবে। কোমলমতি শিশু শিক্ষার্থীদের নিবিড় কৃষিশিক্ষার লক্ষ্যে স্বতন্ত্র পাঠ্যপুস্তক প্রণয়ন এবং কৃষিতে প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত শিক্ষক নিয়োগ করা প্রয়োজন। ব্যবহারিক কৃষিশিক্ষার জন্য সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে কৃষি প্রদর্শনী প্লট বা বাগান গড়ে তোলা বাধ্যতামূলক আইন জারি করতে হবে। বিদ্যালয় বাগান হবে কৃষিশিক্ষার জীবন্ত বিদ্যাপীঠ। এখানে শিক্ষার্থীরা হাতে-কলমে কৃষিভিত্তিক জ্ঞান অর্জন করার সুযোগ পাবে। এর ফলে শিক্ষার্থীরা প্রকৃতি পাঠ, প্রকৃতি পর্যবেক্ষণ এবং প্রায়োগিক কৃষিশিক্ষার ওপর বাস্তব ধারণা লাভ করবে। বিদ্যালয়ের সৌন্দর্যবর্ধন ও উন্নয়নের পাশাপাশি ভবিষ্যত্ প্রজন্ম স্বনির্ভরতা অর্জনে সক্ষম হবে।জাতীয় অগ্রগতি, টেকসই উন্নয়ন এবং জীবনঘনিষ্ঠ শিক্ষার বৃহত্তর স্বার্থে বর্তমানে প্রচলিত পাঁচ বছর মেয়াদি প্রাথমিক শিক্ষার স্থলে আট বছর মেয়াদি প্রাথমিক শিক্ষাব্যবস্থা চালু করা প্রয়োজন। প্রাথমিক শিক্ষার ভিত্তি সুদৃঢ় করার জন্য ন্যূনতম আট বছর মেয়াদি শিক্ষা পদ্ধতি চালু করা অত্যাবশ্যক। পৃথিবীর উন্নত দেশসমূহে আট হতে বারো বছরের বাধ্যতামূলক শিক্ষার মেয়াদ চালু রয়েছে। অষ্টম শ্রেণি শিক্ষা শেষে পাবলিক পরীক্ষা পদ্ধতি চালু করা প্রয়োজন।
মানবসম্পদ উন্নয়নে প্রাথমিক শিক্ষাকে হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করা যায়। জীবনধর্মী ও কর্মমুখী শিক্ষার মাধ্যমে দক্ষ মানবসম্পদ সৃষ্টি করা সম্ভব। প্রাথমিক শিক্ষার লক্ষ্য হলো শিশুর দৈহিক, মানসিক, সামাজিক, আধ্যাত্মিক, নৈতিক, মানবিক ও নান্দনিক বিকাশ সাধন এবং তাকে উন্নত জীবনের স্বপ্ন দর্শনে উদ্বুদ্ধ করা। এ বিশাল লক্ষ্য বাস্তবায়নের জন্য প্রাথমিক শিক্ষাব্যবস্থাকে ঢেলে সাজাতে হবে। পুঁথিগত মুখস্থ বিদ্যার বেড়াজাল থেকে বেরিয়ে হাতে-কলমে দক্ষতা অর্জনের ওপর অধিক গুরুত্ব দিতে। দেশের বিপুলসংখ্যক জনগোষ্ঠীকে দক্ষ মানবসম্পদে রূপান্তরিত করে উন্নয়নের মূল স্রোতধারায় সম্পৃক্ত করতে শিক্ষাই একমাত্র মাধ্যম। আমাদের ন্যায় দরিদ্র ও অনুন্নত দেশের অর্থনৈতিক মুক্তি জীবনমুখী শিক্ষার মধ্যেই নিহিত রয়েছে। জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের ভাষায় বলতে হয়, ‘আমি প্রেম দিতে এসেছিলাম, প্রেম পেতে এসেছিলাম। সে প্রেম পেলাম না বলে আমি এ প্রেমহীন নীরস পৃথিবী থেকে নীরব অভিমানে চিরদিনের জন্য বিদায় নিলাম। এ প্রেমহীন নীরস পৃথিবীতে মানুষের প্রতি মানুষের, সম্প্রদায়ের প্রতি সম্প্রদায়ের এবং বিভিন্ন ধর্মাবলম্বীর মধ্যে হয়তো একদিন প্রেমের বন্যা বয়ে যাবে।তারই প্রতীক্ষায় থাকতে হবে ভবিষ্যত্ প্রজন্মকে। আমাদের তো বিদায় নেয়ার সময় এসেই গেছে। তাই দেশকে এগিয়ে নেয়ার স্বার্থে নতুন প্রজন্মকে সুযোগ্য করে গড়ার পথ তৈরি করে দিতে হবে।
লেখক: যুক্তরাজ্য প্রবাসী।



« পূর্ববর্তী সংবাদপরবর্তী সংবাদ »


সর্বশেষ সংবাদ
সর্বাধিক পঠিত
সম্পাদক ও প্রকাশক: আলহাজ্ব মিজানুর রহমান, উপদেষ্টা সম্পাদক: এ. কে. এম জায়েদ হোসেন খান, নির্বাহী সম্পাদক: নাজমূল হক সরকার।
সম্পাদক ও প্রকাশক কর্তৃক শরীয়তপুর প্রিন্টিং প্রেস, ২৩৪ ফকিরাপুল, ঢাকা থেকে মুদ্রিত।
সম্পাদকীয় ও বাণিজ্যিক কার্যালয় : মুন গ্রুপ, লেভেল-১৭, সানমুন স্টার টাওয়ার ৩৭ দিলকুশা বাণিজ্যিক এলাকা, ঢাকা-১০০০ থেকে মুদ্রিত।, ফোন: ০২-৯৫৮৪১২৪-৫, ফ্যাক্স: ৯৫৮৪১২৩
ওয়েবসাইট : www.dailybartoman.com ই-মেইল : [email protected], [email protected]
Developed & Maintainance by i2soft