শিরোনাম: |
যে কারণে ঘুম থেকে সকালে উঠবেন
|
প্রবাদ আছে- ‘সকাল সকাল ঘুমায় যারা, সকাল সকাল ওঠে যারা। ধনে-জ্ঞানে পূর্ণ তারা, হবেই হবে সবার সেরা।’ আমাদের পূর্ব-পুরুষরাও তাই বলতেন। তবে হালের এই যুগে বিজ্ঞানের নানা উত্কর্ষে আধুনিক খ্যাত আমরা প্রায়শই দেরি করে ঘুমাই এবং দেরি করে উঠি। যা জীবনের উন্নতির অন্তরায়। তাই আজ জেনে নিন কেন আপনি সকাল সকাল উঠবেন-
ব্লগার এগহোসা আহহাই দুই বছর ধরে সকাল ৬টায় বিছানা ছাড়েন। তিনি দাবি করেন, এই অভ্যাস তার জীবন বদলে দিয়েছে। এগহোসা ছয়টি কারণ দেখিয়ে সকালে জেগে ওঠার জন্য অনুপ্রাণিত করেছেন। তা হলো- অনেকেই নিজের লক্ষ্য বা উদ্দেশের কেন্দ্রবিন্দু ঠিক করতে পারেন না বলে তারা লক্ষ্য পূরণ করতে পারেন না। আপনি সহজেই লক্ষ্য থেকে বিচ্যুত হয়ে যাবেন যদি না আপনি দ্রুত চিন্তা করতে না পারেন যে, জরুরিভাবে কোনটি আপনার আগে করা প্রয়োজন। এটা সবারই জানা যে, মানুষের মস্তিষ্ক দিনের প্রথম ভাগে বেশি কাজ করে। তাই এই সময়টা ব্যবহার করুন আপনার জীবনকে নিয়ন্ত্রণে নিতে। ভোরের পাখিরা কাজে যাওয়ার আগেই দিনের পরিকল্পনা করার সুযোগ পায়। যত আগে আপনার দিনের কর্মসূচি তৈরি হয়ে যাবে, আপনি তত কার্যকরভাবে এবং লাভজনকভাবে দিনটি পার করতে পারবেন। আগামী দিন আপনি কী করবেন, তা যদি বিকেলে নির্ধারণ করেন তাহলে তা খুব একটা সুফল বয়ে আনবে না। কারণ দিনের শেষ ভাগে মস্তিষ্ক থাকে ক্লান্ত, যা বিশ্রামই নিতে চাইবে। কে বলেছে সকালে উঠেই অফিসের জন্য আপনাকে দৌড়ঝাঁপ করতে? অনেকেই বলেন তাদের কাছে পরিবার, বিনোদন, ব্যায়াম করার জন্য সময় নেই। কিন্তু আপনি যদি সকাল ৬টায় বিছানার মায়া ত্যাগ করতে পারেন তাহলে দিনের কাজ শুরু করার আগে ব্যায়াম করে নিতে পারেন। যখন আপনি সকালে ব্যায়াম করবেন তখন আপনার শরীর সারাদিন ঝরঝরে থাকবে। আপনি আপনার জীবনে অনেকবারই শুনেছেন যে, সকালের নাস্তা দিনের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ খাবার। যদি কাজে যাওয়ার কয়েক ঘণ্টা আগে ঘুম থেকে ওঠেন, তাহলে আপনি নাস্তা করার সুযোগ পাবেন। জন হপকিন ব্লুমবার্গ স্কুল অব পাবলিক হেলথ পরিচালিত এক গবেষণায় দেখা গেছে, সকালে সঠিকভাবে নাস্তা খাওয়া আপনার স্বাস্থ্যের জন্য ইতিবাচক। গাড়ির জন্য যেমন গ্যাস তেমনি শরীরের জন্য খাদ্য, বিশেষ করে সকালের। নিউইয়র্ক ম্যাগাজিনের একটি আর্টিকেলে টুইটার প্রতিষ্ঠাতা জ্যাক ডরসি বলেন, তার দিন শুরু হয় সকাল ৫টা ৩০ মিনিটে। কর্মজীবন শুরু করার আগের এই সময়টা তিনি ব্যবহার করেন মেডিটেশন ও ১০ কিলোমিটার হেঁটে। অ্যাপলের সিইও টিম কুক, তার দিন শুরু হয় ৪টা ৩০ মিনিটে। ভার্জিন গ্রুপের প্রতিষ্ঠাতা রিচার্ড ব্যারেন্সন। তার দিন শুরু হয় সূর্য ওঠার সঙ্গে সঙ্গে। ‘বিজনেস ইনসাইডার’ এ দেয়া এক সাক্ষাত্কারে তিনি বলেন ৫টা ৪৫ মিনিটে তিনি ঘুম থেকে ওঠেন। সবার চেয়ে দুই ধাপ এগিয়ে থাকবেন গবেষকরা দেখিয়েছেন সকালে ঘুম থেকে ওঠার অভ্যাস আপনার সৃষ্টিশীল ক্ষমতাকে ছড়িয়ে দেবে। তাছাড়া এটি আপনার আত্মবিশ্বাস বাড়াবে। আপনি তখন কাজ শুরু করবেন যখন আপনার প্রতিপক্ষ ঘুমাচ্ছে। ব্লগার এগহোসা আহহাই বলেন, ‘আগে আমি সকাল ৮টা পর্যন্ত ঘুমাতাম। এখন আমি আমার নতুন অভ্যাসে অনেক এনার্জি পাই এবং সারাদিন পর মনে হয় আমি আমার কাজ সঠিকভাবে করতে পেরেছি।’ আপনি যদি আপনার দুই থেকে আড়াই ঘণ্টা আগে ওঠার প্রশিক্ষণ নিজেকে দেন তাহলে আপনি প্রতিদিন ১৫০ মিনিট বেশি পাবেন। এবং সপ্তাহে সাড়ে ১৭ ঘণ্টা, মাসে ৭০ ঘণ্টার বেশি ও বছরে ৮৪০ ঘণ্টা বেশি পাবেন। এখন পছন্দ আপনার। - জীবনযাপন ডেস্ক |