শিরোনাম: |
প্রকৃতির হাতছানি আড়াইহাজার
|
ভ্রমণপিপাসুদের পিপাসার ঘাটতি হয়তো কখনই শেষ হবার নয়। তথাপিও চাই নতুন নতুন জায়গা আবিষ্কার। অভিনব, বিস্মিত করার মতো প্রকৃতি কিংবা কোনো স্থাপনা। তাহলেই হয়তো পিপাসায় কিছুটা হলেও তৃষ্ণা মিটবে। তাই তো ভ্রমণপিপাসুদের জন্য আজ ‘হাওয়া বদল’ এ থাকছে ঢাকার কাছেই ভ্রমণের জন্য আড়াইহাজারের ওপর বিশেষ ফিচার। আশা করছি ভবঘুরে মানুষদের নতুন এক অভিজ্ঞতা ও নির্মল বিনোদন দেবে এখানকার প্রকৃতি এবং সতেজতা। এছাড়া সঙ্গে রয়েছে ভ্রমণের জন্য জাদুঘর নিয়ে বিশেষ ফিচার। বিস্তারিত জানাচ্ছেন - অনিন্দ্য তাওহীদ
সাতগ্রাম জমিদার বাড়ি ব্রিটিশ আমলে নির্মিত জমিদার বাড়ি এটি। অবস্থান সাতগ্রাম ইউনিয়নে। অত্যাচারী জমিদারের নানান কাহিনী জড়িত বাড়ির প্রতি ইটে ইটে। সেসব মর্মান্তিক ইতিহাসকে পেছনে ফেলে বাড়িটি দাঁড়িয়ে আছে কালের সাক্ষী হয়ে। বাড়িটি যেমন সুন্দর এর চারপাশটাও তেমনি সুন্দর। পুকুর ঘাট, বাগান সবকিছুই ভালো লাগবে আপনার জমিদার বাড়িটি দেখতে হলে সিলেট মহাসড়কের পুরিন্দা বাস স্ট্যান্ড থেকে নেমে পায়ে হেটে বা রিকশাযোগে যেতে পারেন। বালিয়াপাড়া জমিদার বাড়ি লাল ইট আর চুন সুরকির সমন্বয়ে তৈরি চমত্কার একটি স্থাপনা বালিয়াপাড়া জমিদার বাড়ি। তিন তলা এল প্যাটার্ণের বাড়িটি সগৌরবে দাঁড়িয়ে আছে এখনও। পরিত্যক্ত নয়, এটি এখনও ব্যবহার উপযোগী। ইউনিয়ন ভূমি অফিস হিসেবে ব্যবহূত হচ্ছে এটি। বালিয়াপাড়ার ইতিহাস জানতে হলে এখানে যাওয়া অত্যাবশ্যক। এখানে যেতে হলে আগে আপনাকে যেতে হবে আড়াইহাজার সদর উপজেলায়। সেখান থেকে বাসে বা টেম্পুতে করে ৪ কিমি. পশ্চিমে গেলেই দেখা মিলবে এই বাড়িটির। অথবা মদনপুর থেকে সি এন জিতে করেও যেতে পারেন। বিশনন্দী ফেরিঘাট ও মেঘনা নদী এই ফেরিঘাটটি সদর উপজেলা থেকে ৯ কিমি. দূরে। উত্তাল মেঘনা মানুষের মনে সমুদ্রের প্রতিরূপ হয়ে ধরা দিয়েছে যেন আর তাই দূরের সমুদ্রের কাছাকাছি স্বাদের মেঘনার দিকে ছুটে যাচ্ছেন অনেকেই। নদীতীরের বিস্তীর্ণ এলাকাজুড়ে রয়েছে বালুকাবেলা। নদীর কাছে যাওয়াও সহজ। সদর উপজেলা থেকে বাসে বা সিএনজিতে করে চলে যেতে পারেন এখানে। ঢাকা থেকে সরাসরি ফেরিঘাট পর্যন্ত বাসও আছে। গোপালদী জমিদার বাড়ি গোপালদীতে আছে জমিদার আমলে তৈরি অনেক ঐতিহাসিক নিদর্শন। আছে জমিদার বাড়ি। জমিদার গোপালচন্দ্র সরকারের সেই আমলের বাড়ি, স্থাপত্য নিদর্শনগুলো তার জমিদারির আভিজাত্য প্রকাশ করে। তিনি ছিলেন এই এলাকার সবচেয়ে বড় জমিদার। শোনা যায় তার নামেই গ্রামের নাম গোপালদী। গোপালদীর পুরো এলাকাই ঘুরে দেখার জন্য চমত্কার। স্থাপত্যগুলোর সেই জৌলুস আর নেই সত্যি। তবে কারুকাজগুলো এখনও চোখে পড়ার মতো। বাড়ির সঙ্গে শান বাঁধানো পুকুর, উঠান সবই আছে। পরিবেশও চমত্কার। এখনও পুকুর ঘাটের সিঁড়িগুলো অক্ষত অবস্থায় আছে। সদর উপজেলা থেকে গোপালদী যাবার বাস অথবা টেম্পো আছে ভাড়া ১০-১৫ টাকা। গোপালদী থেকে রিকশা যোগে এই জমিদার বাড়ি ঘুরে আসতে পারেন। কালাপাহাড়িয়া ইউনিয়ন ও চর অঞ্চল কালাপাহাড়িয়া ইউনিয়নে আছে ১৮টি গ্রাম। চরাঞ্চলে বেড়ানোর জন্য যে কোন গ্রামে চলে যেতে পারেন আপনি। প্রতিটি গ্রামই সুন্দর। বর্ষা মৌসুমে গ্রামগুলো দ্বীপের মতো হয়ে যায়। সবুজ গাছগাছালি, মেঠো পথ, ফসলি জমি আর নদী যেন ছিমছাম জীবনের এক অনবদ্য চিত্র। এখানে গ্রামের মাঠে বা নদী তীরে ক্যাম্পিং করতে পারেন বন্ধুরা মিলে। বিশেষ করে খালিয়ারচর, রাধানগর, কালাপাহাড়িয়া, কদিমচর, খাগকান্দা গ্রাম গুলো ক্যাম্প করার জন্য বিশেষ উপযোগী। এই ইউনিন দুই ভাবে যাতায়াত করা যায়। খাগকাণ্ডা, কদিমচর যেতে হলে বাসে করে আগে আড়াইহাজার সদর যেতে হবে। সেখান থেকে অটোরিকশায় যেতে হবে খাগকান্দা খেয়া ঘাট। খেয়া পাড় হলেই খাগকান্দা গ্রাম। সেখান থেকে সড়ক পথে পায়ে হেঁটে অথবা নৌকা করে কদিমচর ও অন্যান্য গ্রামে যেতে পারবেন। এছাড়াও খালিয়ারর্চ, কালাপাহাড়িয়া, রাধানগর যেতে চাইলে ঢাকা থেকে মোগড়াপাড়া বাস স্ট্যান্ডে নেমে সিএনজি করে বৈদ্যের বাজার ঘাটে আসতে হবে। ভাড়া ৪০-৫০ টাকা পড়বে। সেখান থেকে লোকাল লাইনের ট্রলারে করে এই গ্রামগুলোতে আসা যায়। ট্রলারে সময় লাগে এক থেকে দেড় ঘণ্টার মতো। লোকালে ভাড়া পড়বে ৩০/৪০ টাকা। আবার চাইলে ট্রলার রিসার্ভও করতে পারেন। ভাড়া পড়বে ৫০০-৭০০ টাকা। গরীবুল্লাহ শাহ্র মাজার ও কাহিন্দী গ্রাম আড়াইহাজারের কাহিন্দী গ্রামে আছে প্রাচীন একটি মাজার। উপজেলা সদরের থানার মোড় থেকে রিক্সা নিয়ে সহজেই চলে যেতে পারবেন এই গ্রামে। ধর্ম প্রচারক গরীবুল্লাহ শাহের মাজারটি দেখার পাশাপাশি ঘুরে দেখতে পারেন চমত্কার গ্রামটি। কীভাবে যাবেন ঢাকার গুলিস্তান থেকে আড়াই হাজার/ গোপালদীর সরাসরি বাস সার্ভিস আছে। এছাড়াও গুলিস্তান থেকে মদনপুর নেমে ভেতর দিয়েও বাস বা সিএনজিযোগে যাওয়া যায়। |