শিরোনাম: |
বাংলাদেশের অভ্যুদয়ে ভুটান প্রথম স্বীকৃতিদানকারী দেশ
|
স্বপন কুমার সাহা : মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যখন ভুটানে তিন দিনের রাষ্ট্রীয় সফরে গেলেন তখন মনে পড়ে গেল ভুটানের চিরস্মরণীয় অবদানের কথা। ১৯৭১ সালের ৬ ডিসেম্বর পৃথিবীর মানচিত্রে নতুন করে জন্ম নেয়া বাংলাদেশকে স্বীকৃতি দিয়ে বিশ্ববাসীকে জানিয়ে দিয়েছিল বাংলাদেশ একটি স্বাধীন ও সার্বভৌম রাষ্ট্র। বন্ধুত্বের এই অবদান বিরলই শুধু নয় চিরস্মরণীয় উভয় দেশের ইতিহাসে। ভুটানের স্বীকৃতির কয়েক ঘণ্টা পরেই চির-অকৃত্রিম বন্ধু ও বৃহত্তম প্রতিবেশী দেশ ভারত বাংলাদেশের অভ্যুদয়কে স্বীকৃতি দিয়েছিল। তার ধারাবাহিকতা মেনেই ১৯৭১ সালের ১২ ডিসেম্বর বুলগেরিয়া ও পোল্যান্ড স্বীকৃতি দিয়ে বাংলাদেশের অভ্যুদয়ের স্বীকৃতির অগ্রযাত্রাকে এগিয়ে দিয়েছিল। তার পরপরই শুরু হয়েছিল বিশ্বের অন্যান্য দেশের স্বীকৃতির দেয়ার পালা। এভাবেই বাংলাদেশ ১৬ ডিসেম্বর স্বাধীনতার লাল সূর্যকে ছিনিয়ে বিজয়ের স্বাধীন সার্বভৌম রাষ্ট্রের পতাকা বিশ্বের মানচিত্রে স্বগৌরবে স্থান করে নিল
বাংলাদেশকে প্রথম স্বীকৃতিদানকারী ভুটান আমাদের কাছে প্রতিবেশী রাষ্ট্র। ভুটান ছোট রাষ্ট্র হলেও ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসে এক মহত্ সাহসী ভূমিকা পালন করে বাংলাদেশকে কৃতজ্ঞতার বন্ধনে আবদ্ধ করেছে। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যখন ভুটানে তিন দিনের রাষ্ট্রীয় সফরে গেলেন তখন মনে পড়ে গেল ভুটানের চিরস্মরণীয় অবদানের কথা। ১৯৭১ সালের ৬ ডিসেম্বর পৃথিবীর মানচিত্রে নতুন করে জন্ম নেয়া বাংলাদেশকে স্বীকৃতি দিয়ে বিশ্ববাসীকে জানিয়ে দিয়েছিল বাংলাদেশ একটি স্বাধীন ও সার্বভৌম রাষ্ট্র। বন্ধুত্বের এই অবদান বিরলই কেবল নয় চিরস্মরণীয় উভয় দেশের ইতিহাসে। ভুটানের স্বীকৃতির কয়েক ঘণ্টা পরেই চির-অকৃত্রিম বন্ধু ও বৃহত্তম প্রতিবেশী দেশ ভারত বাংলাদেশের অভ্যুদয়কে স্বীকৃতি দিয়েছিল। তার ধারাবাহিকতা মেনেই ১৯৭১ সালের ১২ ডিসেম্বর বুলগেরিয়া ও পোল্যান্ড স্বীকৃতি দিয়ে বাংলাদেশের অভ্যুদয়ের স্বীকৃতির অগ্রযাত্রাকে এগিয়ে দিয়েছিল। তার পরপরই শুরু হয়েছিল বিশ্বের অন্যান্য দেশের স্বীকৃতির দেয়ার পালা। এভাবেই বাংলাদেশ ১৬ ডিসেম্বর স্বাধীনতার লাল সূর্যকে ছিনিয়ে বিজয়ের স্বাধীন সার্বভৌম রাষ্ট্রের পতাকা বিশ্বের মানচিত্রে স্বগৌরবে স্থান করে নিল। ১. অটিজম বিষয়ে আন্তর্জাতিক সম্মেলনে যোগদানের উদ্দেশ্যে তিন দিনের (১৮ এপ্রিল) রাষ্ট্রীয় সফরে ভুটান পৌঁছালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে লাল গালিচা অভ্যর্থনা জানানো হয়। ভুটানের প্রধানমন্ত্রী তেসেরিং তোবগে বিমানবন্দরে শেখ হাসিনাকে আন্তরিক অভিনন্দন জানান। বিমানবন্দর থেকে প্রধানমন্ত্রীকে লা মেরিডিয়ান থিম্পু হোটেলে নিয়ে যাওয়া হয়। সফরকালীন সময়ে প্রধানমন্ত্রী সেখানে অবস্থান করেন। ভৌগোলিক আয়তনের দিকে একটি ছোট রাষ্ট্র হলেও ভুটান আমাদের মুক্তিযুদ্ধের বিজয়ের মাস ৬ ডিসেম্বরের প্রথম স্বৃীকৃতির মাধ্যমে শুধু বাংলাদেশের মুক্তিযোদ্ধাদের নয় আন্তর্জাতিক অঙ্গনেও এক অনন্য ভূমিকা রেখেছে। ভুটানের স্বীকৃতিতে মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণকারী মুক্তিযোদ্ধারা আরও উত্সাহ উদ্দীপনার মাধ্যমে যুদ্ধ করে বাংলাদেশের চূড়ান্ত বিজয়কে ত্বরান্বিত করেছে এবং বিশ্বের অন্যান্য দেশকে স্বীকৃতি দেয়ার ক্ষেত্রে উদ্বুদ্ধ করেছে। ভুটানের স্বীকৃতি দেয়ার কয়েক ঘণ্টা পরেই ভারত বাংলাদেশকে স্বীকৃতি দিয়ে অকৃত্রিম বন্ধু হিসেবে বাংলাদেশের জনগণের কাছে বন্ধুত্বের গ্রহণযোগ্যতা অর্জন করেছে। এখানে তত্কালীন প্রধানমন্ত্রী প্রয়াত শ্রীমতি ইন্দিরা গান্ধীর কথা উল্ল্লেখ না করলে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসকে উপেক্ষা করা হবে বলে আমি দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি। শ্রীমতি ইন্দিরা গান্ধীর দূরদর্শী নেতৃত্ব আমাদের মুক্তিযুদ্ধের সর্বাত্মক সাহায়তার ফলে মুক্তযুদ্ধের বিজয় ও আন্তর্জাতিক নেতাদের বাংলাদেশের পক্ষে সমর্থন আদায়ে এক অনন্য ও সাহসী ভূমিকা রাখেন। যা কোনোদিন ভোলা যাবে না। যতদিন পৃথিবীর ইতিহাসে বাংলাদেশ চিরঞ্জীব হয়ে থাকবে ততদিন ভারতের প্রয়াত প্রধানমন্ত্রী শ্রীমতি ইন্দিরা গান্ধীর নাম মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসে অমর হয়ে থাকবে। ২ মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভুটান সফরে প্রথমদিন মঙ্গলবার ভুটানের রাজধানী থিম্পুর গফলয়ং শংখানে দুই দেশের প্রধানমন্ত্রী দ্বিপাক্ষিক বৈঠক করেন। এ দ্বিপাক্ষিক বৈঠকে দুদেশের মধ্যে ৫টি চুক্তি ও সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষর হয়। দুই দেশের প্রধানমন্ত্রীর উপস্থিতিতে স্বাক্ষরিত চুক্তি ও সমঝোতা স্মারকগুলো হলো, দ্বৈতকর প্রত্যাহার, বাংলাদেশের নৌপথ ভুটানকে ব্যবহার করতে দেয়া, কৃষি, সংস্কৃতি ও পণ্যের মান নিয়ন্ত্রণ। দ্বৈতকর প্রত্যাহার ও বাংলাদেশের নৌপথ ব্যবহার উভয়দেশের ব্যবস্যা বাণিজ্যে এক নতুন দিগন্তের শুভ সূচনা হলো বলে রাজনৈতিক অভিজ্ঞ মহল মনে করেন। এছাড়া বৈঠকে চার দেশীয় যোগাযোগ ব্যবস্থা (বিধি আট এর) কার্যকর, পারস্পরিক বাণিজ্য বৃদ্ধি, জলবিদ্যুত্ স্থাপন ও বিদ্যুত্ আমদানি, নদীর অববাহিকাভিত্তিক পানিসম্পদ উপ-আঞ্চলিক সহযোগিতা, কানেক্টিভিটি ইত্যাদি বিষয় নিয়ে গুরুত্বপূর্ণ আলোচনা হয়। তা ছাড়াও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বুধবার (এপ্রিল ১৯) অটিজম এবং নিউরো ডেভেলপমেন্ট ডিজঅডার বিষয়ে তিন দিনব্যাপী আন্তর্জাতিক সম্মেলনে ‘গেস্ট অব অনার’ হিসেবে যোগ দিয়েছেন। বাংলাদেশ অটিজমের ওপর যে সব প্রতিশ্রুতি নিয়ে কাজ করছে উদ্বোধনী ভাষণে তা উল্ল্লেখ করে আন্তর্জাতিক সম্মেলনে প্রশংসা অর্জন করেছে। অটিজম নিয়ে গভীর জ্ঞান অর্জন করে অটিজম আন্দেলন নিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কন্যা সায়মা ওয়াজেদ পুতুল ব্যাপক প্রশংসা অর্জন করে রোল মডেল হিসেবে পরিচিত হয়েছেন। ভুটানে অনুষ্ঠিত অটিজমের ওপর আন্তর্জাতিক সম্মেলনে সায়মা ওয়াজেদ পুতুলের আন্তরিক প্রচেষ্টায় দক্ষিণ এশিয়ায় অটিজম নিয়ে কাজ করার জন্য ভুটানের সম্মেলন বিশেষ ভূমিকা রাখবে। অটিজম আন্দোলন প্রসঙ্গটি বিশ্বজনীন কেন এত গুরুত্বপূর্ণ তা বোঝাতে এই উদ্ধৃতিটি ব্যবহার করছি: There is no specific drug to treat autism. Special education and training curriculum system can improve prognosis. With the increased study of autism, we have gradually realized that autism is a diffuse developmental disorder of the central nervous system, which falls under certain genetic factors, and is caused by the stimulation of various kinds of environmental factors. All kinds of genetic factors and environmental factors interfere with the normal development of the nervous system. The patient may have less normally functional nerve cells in the brain than other children of the same age. There has been significant stagnation in growth in many encephalic regions After many years of study, the Wu Stem Cell Medical Center (WSCMC) found that restarting the nervous system development of the brain is important to treat autism. The WSCMC used neural stem cell implants, in addition to unique stem cell regulation techniques for the body, in order to enable the implanted neural stem cells to reach the target organs and restart the development of specific nerve cells in the brain. This can significantly improve the symptoms of autism, and improve the environmental communication skills and self-care ability required in daily life. আজকের বিশ্বায়নের যুগে পার্শ্ববর্তী রাষ্ট্র ও বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের পরীক্ষিত বন্ধু দেশ ভুটানে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর ও তিন দিনব্যাপী রাষ্ট্রীয় সফরের মাধ্যমে বন্ধুত্বের এক নতুন মাত্রা যোগ হয়েছে বলে মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বিশ্বাসী বাংলাদেশের জনগণ বিশ্বাস করে। Land Locked (ভূ-বেষ্টিত Land scape প্রাকৃতিক ভূ-দৃশ্য বা প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে ও লীলাক্ষেত্র) অসমতল অর্থাত্ পাহাড় ও পর্বতের প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের দেশ ভুটান। পাহাড় ও প্রাকৃতিক সৌন্দর্যমণ্ডিত ভুটানে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও ভুটানের প্রধানমন্ত্রী তেসেরিং তোবগের উপস্থিতিতে চুক্তিগুলো দুই দেশের ব্যবসা-বাণিজ্য বৃদ্ধি পাবে। বিশেষ করে ভুটানের ব্যবস্যা-বাণিজ্যের জন্য বাংলাদেশের নদী ব্যবহারের ফলে ভুটানের জনগণের ব্যবসা-বাণিজ্য আরও প্রসারিত হবে এবং অর্থনৈতিকভাবে ভুটানের গতি বাড়বে। একই সঙ্গে উভয় দেশের জনগণের অর্থনৈতিক অবস্থা আরও চাঙ্গা হবে এবং আমাদের দুই দেশের আরও নৈকট্যে আসবে। বিশ্বায়নের যুগে এভাবেই সারা বিশ্বের মানুষের নতুন জাগরণ ঘটবে এবং বিশ্বব্যাপী ক্ষুধা, দারিদ্র্য, স্বাস্থ্য, শিক্ষা ও বাসস্থানের গুণগত পরিবর্তন আসবে। প্রতিটি দেশের রাষ্ট্রনায়করা উদারতার মনোভাব নিয়ে এগিয়ে আসলে পারফেক্ট বিশ্বায়নের স্ল্লোগানের তাত্পর্য সার্থক হবে। বাংলাদেশ ভারত সীমান্ত ৪০৯৬ কিলোমিটার দীর্ঘ (২৫৪৫ মাইল)। বাংলাদেশ-মিয়ানমারের দক্ষিণ সীমান্ত চট্টগ্রামের হিলট্র্যাক্টস নেপাল থেকে মাত্র ২৭ কিলোমিটারের দুরত্ব। অনুরূপ নিকটতম প্রতিবেশী রাষ্ট্র ভুটানের দুরত্ব মাত্র ৩২ কিলোমিটার। নেপাল এবং ভুটান দুটি হিমালিয়ান দেশই হলো (Land Locked) ভূবেষ্টিত। Land scape (প্রাকৃতিক ভূ-দৃশ্য) ভুটান একটি প্রাকৃতিক সুন্দর দেশ। ভুটান হলো প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের লীলাভূমি। দূষণমুক্ত প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে ভুটানবাসী নির্ভেজাল বাতাস মনোমুগ্ধকর পরিবেশে উপভোগ করে। ৩ Globalization বা বিশ্বায়নের যুগে পার্শ্ববর্তী রাষ্ট্রগুলোর উদ্দেশ্যও যোগাযোগ ব্যবস্থাকে উন্নত করে স্ব-স্ব দেশের অর্থনীতিকে গতিশীল ও মানুষের জীবনযাত্রার মান উন্নত করা। এ কারণেই বাংলাদেশ, ভারত, নেপাল, ভুটান, মিয়ানমার, থাইল্যান্ডের মধ্যকার পারস্পরিক যোগাযোগ ব্যবস্থা উন্নত করে সংযোগের প্রয়োজনীয়তা বিভিন্ন দেশের নেতারা স্ব-স্ব দেশের স্বার্থে ভীষণভাবে অনুভব করছে, এবং বিশ্বায়নের স্লোগানে সমানতালে বিভিন্ন উন্নয়নে আগ্রহী হচ্ছে। এ ব্যাপারে আমাদের বাংলাদেশ সোচ্চার। বিশ্বায়নের অগ্রযাত্রাকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য বাংলাদেশ নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে। এর ফলে শুধু ব্যবসা-বাণিজ্য ও জীবনযাত্রার মান উন্নত নয়, আলোচ্য দেশগুলোর সংস্কৃতির বন্ধনকে আরও দৃঢ় করতে আমাদের এক ছাতার নিচে আসতে হবে। স্ব-স্ব দেশের সাংস্কৃতিক বন্ধনকে যদি আমরা ধারণ করতে পারি তবেই মানুষে মানুষে হিংসা-বিদ্বেষ ভুলে ধর্ম-বর্ণে এক নতুন যুগসূত্র স্থাপন করে মানুষকে ভালোবাসার মাধ্যমে সাম্প্রদায়িকতা, জাতীয়তাবাদ, সন্ত্রাসবাদ নির্মূল করা সম্ভব হবে। পাশাপাশি দেশগুলোর মধ্যে পারস্পারিক ভূমিজ সংস্কৃতির বিনিময় সকল উন্নয়নের প্রশ্নে গুরুত্বপূর্ণ প্রসঙ্গ হবে বলে মনে করি। এতে করে সকল দেশের সঙ্গে আমাদের রাজনৈতিক সম্পর্ক আরও জোরালো হবে। এ জোরালো সম্পর্ক তখন শুধু বিভিন্ন রাষ্ট্রের সঙ্গেই হবে না, এই সম্পর্কের বন্ধন মানুষের অনুভূতির মধ্যে গড়ে উঠবে এক সৌহার্দ্যপূর্ণ সম্পর্ক, শান্তি ও চির সবুজ পৃথিবী। লেখক: উপদেষ্টা সম্পাদক দৈনিক বর্তমান। |