শিরোনাম: |
দক্ষিণ কোরিয়ায় ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা মোতায়েন যুক্তরাষ্ট্রের
|
বর্তমান ডেস্ক : কোরিয়া উপদ্বীপে চলমান উত্তেজনার মধ্যেই মার্কিন সামরিক বাহিনী দক্ষিণ কোরিয়ায় থাড ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা মোতায়েন শুরু করেছে। তবে এ ঘটনায় যুদ্ধবিরোধী স্থানীয়রা বিক্ষোভ জানিয়েছে। খবর ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্স। গতকাল বুধবার টার্মিনাল হাই অ্যাল্টিচিউড এরিয়া ডিফেন্স (থাড)-এ ব্যবহূত রাডার ও অন্যান্য সরঞ্জাম মোতায়েন করার জন্য ছয়টি ট্রেইলারে করে দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলীয় সেউনজু এলাকার একটি গলফ খেলার মাঠে নেয়া হয়। যন্ত্রপাতি পরিবহন করার সময় বিক্ষোভকারীরা তাতে বাধা দেন। এতে পুলিশের সঙ্গে বিক্ষোভকারীদের সংঘর্ষ হয়েছে। দক্ষিণ কোরিয়ার আসন্ন নির্বাচনে এগিয়ে থাকা প্রার্থীরাও এ নিয়ে কঠোর সমালোচনা করছেন। নির্বাচনের অন্যতম প্রার্থী মুন জা ইনের মুখপাত্র জানান, মার্কিনিদের থাড মোতায়েনের অনুমতি দিয়ে জনগণের মতামত এবং যথাযথ প্রক্রিয়াকে উপেক্ষা করা হয়েছে। যদি ক্ষমতায় মুন আসেন তবে তিনি এটি বাতিল করবেন বলেও ওই মুখপাত্র জানান।
আগামী ৯ মে দক্ষিণ কোরিয়ায় প্রেসিডেন্ট নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। দক্ষিণ কোরিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় জানায়, থাড ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরক্ষা ব্যবস্থার কিছু সরঞ্জাম দেশটির দক্ষিণে নেয়া হয়েছে। যে স্থানে নেওয়া হয়েছে সেটি এক সময় গলফ খেলার মাঠ ছিল। মন্ত্রণালয় তাদের বিবৃতিতে আরও জানায়, উত্তর কোরিয়ার পরমাণু কর্মসূচির ফলে এ অঞ্চলে যে হুমকি সৃষ্টি হয়েছে তা মোকাবিলায় নিরাপত্তা বৃদ্ধির জন্য যুক্তরাষ্ট্র ও দক্ষিণ কোরিয়া এ প্রযুক্তি মোতায়েন করছে। থাড প্রযুক্তি এ বছরের শেষ নাগাদ কার্যকর হবে বলে জানায় দক্ষিণ কোরিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়। উত্তর কোরিয়া একসঙ্গে চারটি ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষার পর , মার্চের গোড়ার দিকে যুক্তরাষ্ট্র ‘থাড’ ক্ষেপনাস্ত্র প্রতিরোধক পদ্ধতির প্রাথমিক যন্ত্রপাতি দক্ষিণ কোরিয়ায় পাঠাতে শুরু করে। ওয়াশিংটন দাবি করে, জাপানে অবস্থিত মার্কিন ঘাঁটিগুলোতে হামলা চালানোর লক্ষ্যে উত্তর কোরিয়া নিজের ক্ষেপণাস্ত্র কর্মসূচির বিস্তার ঘটানোর কারণে এ ব্যবস্থা মোতায়েন করা হচ্ছে। যুক্তরাষ্ট্রের এমন সিদ্ধান্তে ক্ষুব্ধ হয়েছে চীন। বেইজিং বলছে, ওয়াশিংটনের এমন সিদ্ধান্ত উত্তর কোরিয়াকে তেমন প্রভাবিত করতে পারবে না। দক্ষিণ কোরিয়ার ভূমিতে ‘থাড’ মোতায়েনে আঞ্চলিক নিরাপত্তা ক্ষতিগ্রস্ত হবে উল্লেখ করে এর আগে রাশিয়া এবং চীন বলেছে, এর বিরুদ্ধে তারা সম্মিলিত অবস্থান জোরদার করবে। এ ঘটনার পর চীন তার নতুন বিমানবাহী রণতরী উদ্বোধন করেছে। রণতরীটি ২০২০ সালে উদ্বোধনের কথা ছিল। চীনা প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, ওই রণতরীতে চীনের জে-১৫ যুদ্ধবিমানসহ অন্যান্য বিমান থাকবে। তবে রণতরীটি পারমাণবিক ক্ষেপণাস্ত্র বহন করবে না বলে জানানো হয়েছে। যুক্তরাষ্ট্র ও উত্তর কোরিয়া পরস্পর উসকানিমূলক কর্মকাণ্ড এবং মার্কিন বিমানবাহী রণতরী ভিনসন স্ট্রাইক গ্রুপকে কোরিয়া উপদ্বীপে পাঠানোর ঘোষণার পর শুরু হওয়া যুদ্ধাবস্থার মধ্যেই চীন রণতরীটি জলে নামিয়েছে। এদিকে, নতুন করে উত্তেজনা তৈরি করেছে দক্ষিণ কোরিয়ায় মার্কিন সাবমেরিনের উপস্থিতি। পারমাণবিক ক্ষেপণাস্ত্র বহনকারী ইউএসএস মিশিগান মঙ্গলবার সকালে দক্ষিণ কোরিয়ায় পৌঁছায়। সাবমেরিনটির কার্ল ভিনসন রণতরীর সঙ্গে যোগ দেয়ার কথা রয়েছে মার্কিন নৌবাহিনী জানিয়েছে। পিয়ংইয়ং কোরিয়া উপদ্বীপে যে কোনো সামরিক মহড়াকে আগ্রাসন বলে মনে করে। তারা এর প্রতিক্রিয়ায় হুমকি দিয়েছে, ‘মার্কিন আগ্রাসন রুখতে প্রয়োজনে রণতরী ডুবিয়ে দেয়া হবে।’ |