শিরোনাম: |
আগামী সপ্তাহে ফের পারমাণবিক ক্ষেপণাস্ত্র ছুড়বে উত্তর কোরিয়া
মুখোমুখি ট্রাম্প-কিম
|
বর্তমান ডেস্ক : দিন দশেকের মধ্যেই আরেকটি পারমাণবিক ক্ষেপণাস্ত্র উেক্ষপণের প্রস্তুতি নিচ্ছে উত্তর কোরিয়া। সর্বশেষ পারমাণবিক ক্ষেপণাস্ত্রটি নিক্ষেপের পূর্বমুহূর্তে ভূমিতেই বিস্ফোরিত হবার পর উত্তর কোরিয়া আগামী সপ্তাহে আরেকটি পারমাণবিক ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। বিশেষ করে ক্ষেপণাস্ত্র ব্যর্থ হওয়ার বিষয়টি বিশ্বব্যাপী উত্তর কোরিয়ার জন্যে অপমানজনক হিসেবে মনে করছেন দেশটির প্রেসিডেন্ট কিম জং-উন। এমন দাবি করেছে ব্রিটিশ মিডিয়া ডেইলি স্টার ডট ইউকে। এর আগেও ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপে ব্যর্থ হওয়ার পর অল্প সময়ের মধ্যে দেশটি তা ফের নিক্ষেপে সফলতা দেখিয়েছে। তাই আগামী ২৫ এপ্রিল ফের নতুন করে দূরপাল্লার পারমাণবিক ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করতে যাচ্ছে উত্তর কোরিয়া। আর ওই দিন হচ্ছে উত্তর কোরিয়ার ‘মিলিটারি ফাউন্ডেশন ডে’। দিবসটি উদযাপনে নতুন করে পারমাণবিক ক্ষেপনাস্ত্র নিক্ষেপের মধ্যে দিয়ে হার না মানা প্রতিজ্ঞা অক্ষুণ্ন রাখতে চাচ্ছেন। যদিও তার এধরনের অনমনীয় মনোভাব তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধের হুমকি সৃষ্টি করেছে। বিশেষজ্ঞরা বিশ্বাস করছেন, প্রেসিডেন্ট কিম জং-উন দেশটির জাতীয় দিবসগুলোতে পারমাণবিক ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষা করে থাকেন। সর্বশেষ ক্ষেপণাস্ত্র উেক্ষপণের জন্যে তিনি বেছে নিয়েছিলেন ‘ডে অব দিন সান’ বা সূর্যদিবসের মতো উত্সবের দিনকে। তবে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র উত্তর কোরিয়ার এ ধরনের পারমাণবিক ক্ষেপণাস্ত্র হামলার বিরুদ্ধে সবধরনের ব্যবস্থা গ্রহণের কথা বলছে। সিএনএন-এর সাংবাদিক উইল রিপ্লে বলেছেন আমরা জানি উত্তর কোরিয়া সফল না হওয়া পর্যন্ত বারবার ব্যর্থ হওয়া সত্ত্বেও পারমাণবিক ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষা চালিয়ে যায় ও যাবে।
প্রেসিডেন্ট কিম পরিষ্কার জানিয়ে দিয়েছেন এ ধরনের ব্যর্থ তাকে পিছু হটাতে পারবে না। তাই পরবর্তী ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ তার জন্যে সময়ের বিষয় মাত্র। মার্কিন ভাইস প্রেসিডেন্ট মাইক পেন্স বর্তমানে দক্ষিণ কোরিয়া সফর করছেন। এ অঞ্চলেই তিনি থাকবেন এপ্রিলের শেষ ভাগ পর্যন্ত। তাই ফের পারমাণবিক ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপের দিনক্ষণ হিসেবে সামরিক দিবসকেই বেছে নিচ্ছে উত্তর কোরিয়া। উত্তর কোরিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী একই অভিব্যক্তি প্রকাশ করে বলেছেন, কোনো কিছুই পারমাণবিক ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপে আমাদের দমাতে পারবে না, এবং যখন উপযুক্ত সময় হবে তখনই সে পরীক্ষা আমরা করব। এদিকে যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় নিরাপত্তা পরিষদের প্রধান লেফটেন্যান্ট জেনারেল ম্যাকমাস্টার তার দেশ চীনের সঙ্গে উত্তর কোরিয়ার পারমাণবিক ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপের বিরুদ্ধে কাজ করে যাচ্ছে এবং উত্তর কোরিয়ার এ ধরনের কর্মসূচি অব্যাহত থাকতে পারে না। প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প পরিষ্কার করে বলেছেন, তার দেশ ও মিত্রদেশগুলো উত্তর কোরিয়ার পারমাণবিক কর্মসূচির কারণে হুমকির মুখে পড়েছে এবং তা অব্যাহত রাখা যায় না। মুখোমুখি ট্রাম্প-কিম: মুখোমুখি যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ও উত্তর কোরিয়ার নেতা কিম জং উন। দুজনেই যুদ্ধংদেহী। যুদ্ধের দামামা বাজছে কয়েকদিন ধরেই। চীন সতর্ক করেছে উভয় পক্ষকে। দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী ওয়াং ই বলেছেন, যুদ্ধ শুরু হয়ে যেতে পারে যে কোনো সময়। তাই তিনি উভয় পক্ষকে বিরত থাকার আহ্বান জানান। কিন্তু বাকযুদ্ধ চলতেই থাকে যুক্তরাষ্ট্র ও উত্তর কোরিয়ার মধ্যে। যুক্তরাষ্ট্র হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেছে, ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষা করা হলে, উসকানি দেয়া হলে চীনকে তারা পাশে পাক বা না পাক নিজেরাই একতরফাভাবে হামলা চালাবে উত্তর কোরিয়ায়। উত্তরে সমান জোরে হাঁক ছেড়েছে উত্তর কোরিয়া। তারা সাফ জানিয়ে দিয়েছে পারমাণবিক হামলা করা হলে তারা পারমাণবিক অস্ত্রের মাধ্যমে জবাব দেবে। যদি পারমাণবিক শক্তিধর এ দুটি দেশের মধ্যে পারমাণবিক অস্ত্রের যুদ্ধ শুরু হয় তাতে শুধু তারাই ক্ষতিগ্রস্ত হবে না। একই সঙ্গে প্রতিবেশী দেশগুলোতেও এর প্রভাব পড়বে। তেজষ্ক্রিয়তা ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা থাকে। অর্থনীতিতে এর বিরাট প্রভাব পড়বে। বিশ্লেষকরা সাবধান করে দিয়েছেন আগেই। তারা বলেছেন, উত্তর কোরিয়ার হাতে এমন পারমাণবিক অস্ত্র আছে যা যুক্তরাষ্ট্রে হামলা চালাতে সক্ষম। ফলে ঘটনা কোনদিকে মোড় নেয় তা এখনও বোঝা যাচ্ছে না। তবে উত্তর কোরিয়ার সর্বশেষ ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষা ব্যর্থ হওয়াতে হয়তো যুক্তরাষ্ট্র কিছুটা নীরবতা অবলম্বন করছে। কিন্তু যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল এইচ আর ম্যাকমাস্টার বলেছেন, আমাদের সামনে সব পথ খোলা আছে। তিনি উত্তর কোরিয়াকে এ সময় সাবধানও করে দিয়েছেন। ওদিকে দক্ষিণ কোরিয়া সফরে থাকা যুক্তরাষ্ট্রের ভাইস প্রেসিডেন্ট মাইক পেন্স বলেছেন, রোববার উত্তর কোরিয়া যে ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষা করেছে সেটা একটা প্ররোচণা। ১০ দিনের জন্য এশিয়ায় যুক্তরাষ্ট্রের মিত্র দেশগুলো সফরে এসেছেন মাইক পেন্স। প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প উত্তর কোরিয়াকে হুঁশিয়ার করে বলেছেন, ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষা চালালে ধরে নেয়া হবে সেটা প্ররোচণা এবং এমন ঘটনায় যুক্তরাষ্ট্র তার জবাব দেবে। ওদিকে কোরিয়া উপদ্বীপ অঞ্চলে অব্যাহতভাবে মহড়া দিয়ে বেড়াচ্ছে যুক্তরাষ্ট্রের সেনাবাহিনী, নৌবাহিনী। যেহেতু রোববারের ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষা সফল হয়নি সে জন্যই হয়তো এর কোনো সামরিক জবাব দেয়নি যুক্তরাষ্ট্র। তার অর্থ এই নয় যে, যুক্তরাষ্ট্র চুপ করে আছে। নিরাপত্তা উপদেষ্টার কথায়ই এর প্রতিধ্বনি শোনা যায়- আমাদের সামনে সব পথ খোলা আছে। |