মঙ্গলবার ২৬ নভেম্বর ২০২৪ ১১ অগ্রহায়ণ ১৪৩১
মুজিবনগর কমপ্লেক্স পূর্ণতা পায়নি ১৯ বছরেও
Published : Sunday, 16 April, 2017 at 6:00 AM, Count : 509

মেহেরপুর প্রতিনিধি  : মেহেরপুরের ঐতিহাসিক মুজিবনগর কমপ্লেক্স স্বাধীনতার ইতিহাসের এক অমূল্য স্মারক। একাত্তরের বাংলাদেশকে তুলে ধরার জন্য নির্মিত হয়েছে নানা স্থাপনা। তবে নির্মাণ শুরুর  দীর্ঘ ১৯ বছর পেরিয়ে গেলেও কাজ শেষ হয়নি। অপরদিকে লোকবলের অভাবে এসব স্থাপনা অরক্ষিত হয়ে পড়েছে। ফলে মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস নতুন প্রজন্মের কাছে তুলে ধরার উদ্দেশ্য ব্যাহত হচ্ছে।
১৯৭১ সালের ১৭ এপ্রিল মুজিবনগর তথা বৈদ্যনাথতলা আম্রকাননে বাংলাদেশের প্রথম সরকার শপথ নিয়েছিল। যার মধ্য দিয়ে যুদ্ধরত বাঙালিদের সহযোগিতা করে বিভিন্ন দেশ। এই সরকারের নেতৃত্বে স্বাধীনতা অর্জিত হয়। এ কারণে মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস সংরক্ষণের লক্ষ্যে শপথের স্থানে নির্মিত হয় স্মৃতি সৌধ। ১৯৯৬ সালে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় এলে ৮০ একর জমি অধিগ্রহণ নিয়ে নানা স্থাপনা তৈরির একটি বড় প্রকল্প নেয়। কয়েক দফা নকশা ও বাজেট পরিবর্তন করে নির্মাণ কাজ চলতে থাকে।
উল্লেখ্যযোগ্য স্থাপনার মধ্যে- মুক্তিযুদ্ধ স্মৃতি কেন্দ  মিউজিয়াম ও মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক স্মৃতি ভাস্কর্য নির্মাণ করা হয়েছে। মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের অধীনে গণপূর্ত অধিদফতর নির্মাণ কাজ বাস্তবায়ন করছে। তবে নির্মাণ শুরুর দীর্ঘ ১৯ বছর পেরিয়ে গেলেও এর পূর্ণতা পায়নি। কবে নাগাদ তা সম্পন্ন হবে সে খবরও জানে না স্থানীয় গণপূর্ত কর্মকর্তারা। তবে নির্মাণ সম্পন্ন হওয়া স্থাপনাগুলো দেখভালে লোকবল নিয়োগ হয়নি। প্রতিবছর মুজিবনগর দিবস সামনে রেখে স্থানীয় প্রশাসন পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার কাজ করে। বছরের বাকি সময় অনেকটাই অরক্ষিত থাকে মুজিবনগর কমপ্লেক্স। আম গাছগুলোরও পরিচর্যা হচ্ছে না। অনেক গাছ শুকিয়ে মারা যাচ্ছে। ধীরে ধীরে বিলীন হতে চলেছে প্রথম সরকারের স্বাক্ষী শতবর্ষী এসব আমগাছ।
জানা গেছে, বছর চারেক আগে মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিবসহ সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন দফতরের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা স্মৃতিকেন্দ্রের কাজ পরিদর্শন করেন। কেন্দ্রটির নির্মাণ দ্রুত শেষ করা, দর্শনার্থীদের সুবিধার্থে ২০টি পাবলিক টয়লেট ও টিউবঅয়েল স্থাপন এবং মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক স্মৃতিসংবলিত একটি ফটক নির্মাণের জন্য তারা বাজেট ও পরিকল্পনা পাঠানোর নির্দেশ দেন। নির্দেশনা মতো ৫ কোটি টাকা বরাদ্দ চেয়ে সংশ্লিষ্ট দফতরে ২০১৪ সালে মেহেরপুর গণপূর্ত ওই সময়ের নির্বাহী প্রকৌশলী আহসান উল্লাহ প্রয়োজনীয় কাগজপত্র প্রদান করেন। কিন্তু অর্থ বরাদ্দ পেয়েছেন কি-না তা জনেন না বর্তমান নির্বাহী প্রকৌশলী। বর্তমান নির্বাহী প্রকৌশলীর সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, কাজ প্রায় শেষ। তবে কী কাজ শেষ হয়েছে সে সম্পর্কে তিনি কোনো ধারণা দিতে পারেননি।
মুজিবনগর মুক্তিযুদ্ধ স্মৃতি কমপ্লেক্স দেশের সর্ববৃহত্ মানচিত্র, প্রশাসনিক ভবন, অডিটোরিয়াম, প্রল্লাজা, ছয়স্তর বিশিষ্ট গোলাপ বাগান, পর্যটন মোটেল, শিশু পরিবার, মসজিদ এবং বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক স্মৃতি ভাস্কর্য রয়েছে। বেশ কয়েক বছর ধরে বেশিরভাগ কাজ সম্পন্ন হলেও তা জনবলের অভাবে অরক্ষিত। ফলে দর্শনার্থীদের জন্যও খুলে দেয়া সম্ভব হচ্ছে না। এতে নির্মাণ করা মূল্যবান স্থাপনা বছরের পর বছর অযন্তে অবহেলায় বিনষ্ট হচ্ছে।
]এপ্রিল সরকারের শপথের দিনটি বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসে এক স্মরণীয় দিন। অথচ জাতীয়ভাবে পালিত হয় না মুজিবনগর দিবস। স্বাধীনতার ইতিহাস সমুন্নত রাখতে জাতীয় দিবস ঘোষণার দাবি জানান তিনি। জেলা প্রশাসক পরিমল সিংহ জানান, সম্প্রতি মন্ত্রণালয়ের উচ্চ পর্যায়ের একটি দল কমপ্লেক্স  পরিদর্শন করেছে। শিশু পার্ক, লেক ও নতুন কিছু দৃষ্টিনন্দন স্থাপনা নির্মাণেরও আগ্রহের কথা জানান ওই দলের কর্মকর্তারা।



« পূর্ববর্তী সংবাদপরবর্তী সংবাদ »


সর্বশেষ সংবাদ
সর্বাধিক পঠিত
সম্পাদক ও প্রকাশক: আলহাজ্ব মিজানুর রহমান, উপদেষ্টা সম্পাদক: এ. কে. এম জায়েদ হোসেন খান, নির্বাহী সম্পাদক: নাজমূল হক সরকার।
সম্পাদক ও প্রকাশক কর্তৃক শরীয়তপুর প্রিন্টিং প্রেস, ২৩৪ ফকিরাপুল, ঢাকা থেকে মুদ্রিত।
সম্পাদকীয় ও বাণিজ্যিক কার্যালয় : মুন গ্রুপ, লেভেল-১৭, সানমুন স্টার টাওয়ার ৩৭ দিলকুশা বাণিজ্যিক এলাকা, ঢাকা-১০০০ থেকে মুদ্রিত।, ফোন: ০২-৯৫৮৪১২৪-৫, ফ্যাক্স: ৯৫৮৪১২৩
ওয়েবসাইট : www.dailybartoman.com ই-মেইল : [email protected], [email protected]
Developed & Maintainance by i2soft