শিরোনাম: |
চলচ্চিত্রের হাল ধরার চেষ্টা প্রযোজক-পরিচালকদের
|
শেখ রাজিয়া সূলতানা : দীর্ঘদিন রাজত্ব করেছেন, সেসব অভিনেত্রীর মধ্যে শাবানা, ববিতা, চম্পা, রোজিনা, সুচরিতা, অঞ্জনা, মৌসুমী, শাবনূর, পপি, পূর্ণিমাসহ অনেকেই চলচ্চিত্রের রানী হয়ে নিজ যোগ্যতায়। তাদের নামে সিনেমা হলে ছবি চলেছে বলে তাদের চলচ্চিত্রের রানী বলা হতো। কিন্তু তাদের পর অনেকে রানীর বেশে চলচ্চিত্রে আসলেও খুব বেশিদিন সুবিধা করতে পারেননি। নতুন প্রজন্ম চলচ্চিত্রের অনেক পুরনো অভিনেত্রীর ছবি না দেখলেও তাদের নাম জানেন বা তাদের চেনেন। এমনকি রানীর মুকুট খালি পড়ে থাকলেও তা মাথায় নেয়ার মতো উপযুক্ত রানী এখন নেই বললেই চলে। চলচ্চিত্রের হাল ধরার জন্য এবং নতুন রানী প্রতিষ্ঠা করার জন্য প্রযোজক, পরিচালকরা অনবরত চেষ্টা করছেন। কিন্তু দর্শক কাউকেই আগের মতো মনে স্থান দিতে পারছেন না। মোট কথা কোনো ছবিই তেমন ব্যবসা করতে পারছে না।
তাহলে কি দর্শকের চাহিদামতো ছবি তৈরি হচ্ছে না? এমন প্রশ্নের জবাবে নির্মাতা বদিউল আলম খোকন বলেন, আমাদের মাঝে অনেক গুণী নির্মাতা এখনো ছবি বানাচ্ছেন। তাদের মেধা কাজে লাগিয়ে দর্শকের জন্য সিনেমা তৈরি করছেন। তবে সিনেমা হলে দর্শক ভাগ হয়ে গেছে। কেউ কমেডি, কেউ অ্যাকশন আবার কেউবা রোমান্টিক ছবি পছন্দ করেন। সেই সঙ্গে সিনেমার কোনো অভিনেতা বা অভিনেত্রী দর্শকের মনে বর্তমানে তেমন জায়গা করে নিতে পারছেন না। এটা সময়ের ব্যাপার। চলচ্চিত্রে জনপ্রিয় অভিনেতা বা অভিনেত্রী তৈরি না হলে এই শূন্যতা পূরণ হবে না। পরিচালক ও প্রযোজক এখনো ভালো ছবি দর্শককে উপহার দেয়ার চেষ্টা করছেন। কিন্তু জনপ্রিয় নায়িকার পাশাপাশি ভালো নির্মাতাও তৈরি হচ্ছে না। অপু বিশ্বাস দীর্ঘদিন দর্শকের মনে জায়গা করে নিতে পারলেও এখন তিনি চলচ্চিত্র থেকে দূরে থাকার কারণে দর্শকের মনেও ভাটা পড়েছে। তার জায়গায় অন্য কোনো অভিনেত্রী দর্শক মনে জায়গা করে নিতে পারছেন না। বর্তমানে ববি, মাহি, মিম, আঁচল, পরীমনি, নুসরাত ফারিয়া, আইরিনসহ অনেকেই কাজ করছেন। কিন্তু দর্শকরা তাদের কতটুকু গ্রহণ করছেন এটাই এখন প্রশ্ন। শেষ তিন বছরে হিট ছবির সংখ্যা মাত্র ১০টি। তারপরও এটা নিয়ে অনেক সমালোচকের প্রশ্ন রয়েছে। কারো কারো ধারণা বেশিরভাগ ছবিতে লগ্নিকৃত টাকা এখন ঘরেই ফিরছে না। এর কারণ হিসেবে ডিজিটাল সিনেমা হলো, জনপ্রিয় অভিনেতা-অভিনেত্রীর অভাব বলেও মনে করছেন। বিশেষ করে চলচ্চিত্রে নায়িকা সঙ্কট বলে মনে করছেন বেশিরভাগ নির্মাতা। পরিচালক এসএ হক অলীক বলেন, সত্যি বলতে দর্শক সিনেমা হলে টানার মতো অভিনেত্রী এখন তেমন নেই। এটা বিরাট একটা শূন্যতা। অবশ্য অনেকেই চেষ্টা করছেন। তবে নায়িকাদের অভিনয়ে আরও মনোযোগী হতে হবে। অনেক নায়িকার মধ্যে দেখা যাচ্ছে অভিনয়ে মনোযোগী না হয়ে নিজেকে এক্সপোজ করতেই বেশি ব্যস্ত। এটা হলে চলবে না। প্রত্যেকটি দেশে আগে দর্শক অভিনেতা বা অভিনেত্রীকে দেখে সিনেমা হলে প্রবেশ করে। তারপর গল্প ও তার অভিনয়ে আকৃষ্ট হয়ে ভালোবেসে ফেলে। তাই নির্মাতার পরিশ্রমের পাশাপাশি অভিনয়শিল্পীদেরও এ বিষয়টি মাথায় রাখা জরুরি। কারণ ভালো অভিনয় দিয়েই দর্শকদের মন জয় করা সম্ভব। আরও কয়েকজন নির্মাতা একমত প্রকাশ করেছেন- আগে মৌসুমী, শাবনূর, পপি, পূর্ণিমা বা সবশেষ অপু বিশ্বাসের পোস্টার দেখে, নাম শুনে দর্শক সিনেমা হলে ভিড় করেছেন। নায়কের চেয়ে নায়িকার প্রতি দর্শকের আকৃষ্ট হওয়ার ঘটনাই বেশি। তবে এখন সেই ধরনের জনপ্রিয় অভিনেত্রী না থাকায় দর্শক সিনেমা হলে তেমন ভিড় করছেন না। এর ফলে একের পর এক ছবি ফ্লপ হচ্ছে। ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন প্রযোজক ও পরিচালক। একা নায়ক কোনো ছবি টানতে পারবেন না। ছবিতে নায়িকাকে গল্পের মূল রানী বলা হয়ে থাকে। তাই বর্তমানে রানীর মুকুট পড়ে আছে, রানীর দেখাই শুধু নেই। |