মঙ্গলবার ২৪ ডিসেম্বর ২০২৪ ৮ পৌষ ১৪৩১
গলাচিপায় নদী ও জলাশয় পানিশূন্য: মাছের আকাল
Published : Monday, 27 February, 2017 at 6:00 AM, Update: 27.02.2017 9:33:35 PM, Count : 493

গলাচিপা (পটুয়াখালী) সংবাদদাতা : তীব্র খরার কারণে গলাচিপা উপজেলার ৫০ ভাগেরও বেশি জলাশয় শুকিয়ে যাওয়ায় মাছের আকাল দেখা দিয়েছে। গরিব-দুঃখী মানুষ শরীরের জন্য অতি প্রয়োজনীয় প্রোটিন সমৃদ্ধ মাছের স্বাদ ভুলতে বসেছে। সরকারি হিসাবে ২৫ থেকে ৩০ ভাগ জলাশয় শুকিয়ে যাওয়ার কথা বলা হলেও প্রকৃতপক্ষে এ সংখ্যা দ্বিগুণেরও বেশি।
উপজেলার মত্স্য অফিসের তথ্য মতে, গলাচিপাতে অন্যান্য বছর যে পরিমাণ মাছ উত্পাদন হতো তাতে এলাকার চাহিদা মিটিয়ে ১ হাজার ৫০০ টন মাছ উদ্বৃত্ত থাকত। এসব মাছ এলাকার বাইরে পাঠানো হতো। ২০১৫ সালের আদম শুমারির ভিত্তিতে গলাচিপা উপজেলায় (মাথা পিছু বার্ষিক ১৮ কেজি হিসেবে) মাছের চাহিদা ১২ হাজার ১১৯ টন। গত বছরও এ চাহিদা পূরণ করে মাছ উদ্বৃত্ত থেকেছে। কিন্তু এ বছর জলাশয়গুলো পানি শূন্য হয়ে পড়ায় উদ্বৃত্ত তো দূরের কথা চাহিদাই মিটছে না। অতিরিক্ত দামের কারণে সাধারণ খেটে খাওয়া মানুষ মাছের বাজারে যাওয়া ছেড়ে দিয়েছেন।
গলাচিপার ওপর দিয়ে বয়ে যাওয়া তিনটি প্রধান নদীর আয়তন সাড়ে তিন হাজার হেক্টরের বেশি। এর মধ্যে বুড়াগৌরাঙ্গ নদীর অবস্থান শীর্ষে। এসব নদীর প্রায় সবগুলো শাখা শুকিয়ে গেছে। মাঝে মধ্যে সামান্য কয়েক স্থানে যতটুকু পানি রয়েছে তা মাছের বসবাসযোগ্য নয়। শাখা নদীগুলো শুকিয়ে মরে যাওয়ায় অনেক স্থানে ফসল আবাদ করা হচ্ছে। এলাকার খালগুলোও শুকিয়ে গেছে। সরকারি হিসাবে গলাচিপাতে খালের সংখ্যা ৪০টিরও অধিক। এগুলোর আয়তন এক হাজার ২০০ হেক্টর। এসব খাল এক সময় মাছে পরিপূর্ণ থাকত। এসব খাল শুকিয়ে যাওয়ায় এগুলো এখন মাছশূন্য। প্রায় ১৮ হাজার পুকুরের ৩০ ভাগই শুকিয়ে গেছে। মত্স্য কর্মকর্তাদের মতে এসব পুকুরে চাষকৃত মাছই এলাকাবাসীর চাহিদা পূরণের ক্ষেত্রে অগ্রণী ভূমিকা পালন করে। তবে বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা গেছে ৫০ ভাগেরও বেশি পুকুর শুকনো।
গলাচিপার চালিতাবুনিয়া এলাকার মত্স্য চাষি জলিল মিয়া জানান, এ বছর মাছ চাষের স্থানগুলো শুকিয়ে যাওয়ায় তারা দারুণভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন। তিনি জানান, লিজ নিয়ে ১৫-১৬টির মতো পুকুরে মাছ চাষ করেছেন। লিজ নেয়া এসব পুকুরের অর্ধেকের বেশি পুকুর শুকিয়ে যাওয়ায় তিনি মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। তিনি জানান, বিদ্যুত্ ও সেচ যন্ত্রের অভাবে পুকুরগুলোতে পানিও দেয়া যাচ্ছে না। এ ছাড়া তিনি এ সেক্টরেও ভর্তুকি দেয়ার জন্য সরকারের প্রতি আহ্বান জানান।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে উপজেলা মত্স্য অফিসের একজন সিনিয়র কর্মকর্তা জানান, এলাকার অধিকাংশ সরকারি জলাশয় প্রভাবশালীদের দখলে চলে গেছে। অবৈধ দখলদারদের হাত থেকে এগুলো উদ্ধার করে সরকারের নির্দিষ্ট আইনে এনে লিজ দিতে হবে। গলাচিপা উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান সামসুজ্জামান লিকন জানান, দখলকৃত জলাশয় ও খালগুলো উদ্ধারে শিগগিরই ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে।



« পূর্ববর্তী সংবাদপরবর্তী সংবাদ »


সর্বশেষ সংবাদ
সর্বাধিক পঠিত
সম্পাদক ও প্রকাশক: আলহাজ্ব মিজানুর রহমান, উপদেষ্টা সম্পাদক: এ. কে. এম জায়েদ হোসেন খান, নির্বাহী সম্পাদক: নাজমূল হক সরকার।
সম্পাদক ও প্রকাশক কর্তৃক শরীয়তপুর প্রিন্টিং প্রেস, ২৩৪ ফকিরাপুল, ঢাকা থেকে মুদ্রিত।
সম্পাদকীয় ও বাণিজ্যিক কার্যালয় : মুন গ্রুপ, লেভেল-১৭, সানমুন স্টার টাওয়ার ৩৭ দিলকুশা বাণিজ্যিক এলাকা, ঢাকা-১০০০ থেকে মুদ্রিত।, ফোন: ০২-৯৫৮৪১২৪-৫, ফ্যাক্স: ৯৫৮৪১২৩
ওয়েবসাইট : www.dailybartoman.com ই-মেইল : [email protected], [email protected]
Developed & Maintainance by i2soft