শিরোনাম: |
বসন্ত উৎসবে রঙিন চারদিক
|
বর্তমান প্রতিবেদক : ফাল্গুনের শুরুতে বসন্ত আর ভালোবাসা দিবসকে কেন্দ্র করে দেশব্যাপী মিষ্টি আর ফুলের বিক্রির ধুম পড়েছে। আর এ অজুহাতে কদর বেড়েছে মিষ্টি ও ফুলের। রাজধানী থেকে শুরু করে বিভাগীয় শহরের বিনোদন কেন্দ্র এবং সড়কের মোড়ে কপোত-কপোতী এবং প্রেমিক যুগলের মিষ্টি ও ফুল কেনার দৃশ্য ছিল চোখে পড়ার মতো।
শাহবাগের একাধিক ফুল ব্যবসায়ী জানান, প্রতিবছরই এ সময়টার জন্য অপেক্ষায় থাকেন ফুল ব্যবসায়ীরা। দুদিনের বাণিজ্য ধরতে ফুল ব্যবসায়ীরা লাখ লাখ টাকার ফুল সংরক্ষণ করেছেন। কারণ এই সময়টাতে পাইকারি বাজারে তিন টাকার ফুল বিশ টাকায়ও বিক্রি হয়। আর খুচরা বাজারে ৫০ থেকে ৭০ টাকায়ও বিক্রি হয়। বিক্রিও হচ্ছে পুরোদমে। পাশাপাশি বসন্ত ও ভালোবাসা দিবসে রাজধানীর অভিজাত মিষ্টি দোকানেও ক্রেতাদের ভিড় বেড়েছে। বিশেষ করে রস, মরণচাঁদ, আলাউদ্দিন, বিক্রমপুর, বোম্বে সুইটস, কুমিল্লার মাতৃভাণ্ডার, বগুড়ার মিষ্টি ও দই আকর্ষণীয় বিধায় এ সংশ্লিষ্ট মিষ্টি দোকানে প্রচুর বিক্রি হচ্ছে। গতকাল সোমবার রাজধানীর শাহবাগ, ফার্মগেট, আগারগাঁওসহ বেশ কয়েকটি বাজারে গিয়ে দেখা যায়, ফুলের বিক্রি বেড়েছে অন্যান্য দিনের তুলনায় কয়েকগুণ। ভোরের আলো পড়তে না পড়তে সারাদেশ থেকে ট্রাকে ট্রাকে ফুল আসছে। ব্যবসায়ীরা বলছেন, এবার বাণিজ্য একটু বেশি হচ্ছে। রাজনৈতিক অস্থিরতা ও প্রাকৃতিক কোনো দুর্যোগ না থাকায় এবার ব্যবসায় কোনো সমস্যা হচ্ছে না। মানুষের মনমানসিকতাও ভালো। তাই রমরমা বাণিজ্য হচ্ছে। শাহবাগের বটতলার ফুল ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি আবুল কালাম আজাদ বলেন, এবার মানুষের মধ্যে আনন্দ-উল্লাস একটু বেশি। দেশের সার্বিক পরিবেশও ভালো। এবার শুধু শাহবাগেই কয়েক কোটি টাকার বাণিজ্য হবে, যা গতবাবের চেয়ে অবশ্যই বাড়বে বলে প্রত্যাশা করছি। জানা গেছে, শাহবাগের বেশ কয়েকজন ব্যবসায়ী প্রচুর ফুল সংরক্ষণ করেছেন। এর মধ্যে কালাম আজাদ ফুল স্টোর এক লাখ, বৃষ্টি ভিআইপি ফুল বিতান ৮০ হাজার, চুমকি ফুল বিতান ৬০ হাজার ফুল সংরক্ষণ করছে। পাশাপশি বিক্রিও চলছে। এছাড়া অন্য ব্যবসায়ীরাও সমপরিমাণ ফুল সংরক্ষণ করেছেন বলে জানিয়েছেন। সংশ্লিষ্টরা জানান, পহেলা ফাল্গুন খোঁপায় তাজা ফুল গোঁজে না এমন তরুণী খুঁজে পাওয়া দুষ্কর। এছাড়া সঙ্গীর মন পেতে একটি ফুলের বিকল্প নেই। পাশাপাশি মিষ্টি হলে সম্পর্ক আরও গভীর হয়। তাই এ দুদিন মিষ্টি ও ফুল বিক্রির হার বছরের যে কোনো সময়ের চেয়ে অন্যতম উচ্চতায় পৌঁছায়। নগরজীবনে এ দুটি দিবসে ফুলের গুরুত্ব থাকে একটু বেশি। দিবস পালনে ফুল হয়ে উঠেছে প্রধান আকর্ষণ। সারাদেশের খুচরা বিক্রেতারা শাহবাগ, ফার্মগেট ও আগারগাঁওয়ে অবস্থিত ফুলের পাইকারি মার্কেট আসেন এ উপলক্ষে। প্রতিদিন শুধু রাজধানীর পাইকারি বাজারে ৩০ থেকে ৩৫ লাখ টাকার ফুল কেনাবেচা হয়। আর বিশেষ দিবসে যেমন পহেলা ফাল্গুন ও ভালোবাসা দিবসে ৮ থেকে ১০ কোটি টাকার ফুল বিক্রি হয়। তবে দেশব্যাপী সমিতির অধীনে আরও ছয় হাজার ফুলের দোকান রয়েছে। সব মিলিয়ে ২০-৩০ কোটি টাকার ফুল বাণিজ্য হয়। শাহবাগের পাইকারি বাজারের ফুল ব্যবসায়ী সমিতির সাধারণ সম্পাদক বিল্লাল হোসেন বলেন, অন্যান্য বছরের তুলনায় এবার বেশি ব্যবসা করার পরিকল্পনা নিয়ে পসরা সাজিয়েছেন ব্যবসায়ীরা। শাহবাগে রাজধানীর সবচেয়ে বড় ফুলের বাজার। এখানে রয়েছে ৫১টি পাইকারি ফুলের দোকান। খুচরা আরও শতাধিক। এবারের বসন্ত দিবস ও ভালোবাসা দিবসে ঢাকায় যে কয়েক কোটি টাকার ফুল বিক্রি হবে, এর সিংহভাগই শাহবাগে। রাজধানীজুড়ে হাজারের বেশি ফুল ব্যবসায়ী রয়েছেন। ব্যবসায়ীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, পাইকারি বাজারে প্রতিটি গোলাপ ১২ থেকে ১৮ টাকা, জারবেরা ১৫ থেকে ১৮, গ্লাডিওলাস ৭ থেকে ১৪ ও রজনীগন্ধা ৬-৮ টাকা দরে বেচাকেনা হয়েছে। এছাড়া ৩০০ থেকে ৩৫০ টাকা দামে বিক্রি হচ্ছে এক হাজার গাদা ফুল। আগারগাঁওয়ে ফুল কিনতে আসা মুজিব নামে এক খুচরা ব্যবসায়ী জানান, যেকোনো ধরনের ফুলের গোড়া বালতির পানিতে ভিজিয়ে রাখলে অনায়াসে তিন-চারদিন সতেজ রাখা যায়। তাই আগেও কিছু ফুল কিনে রেখেছিলাম। তবে আরও প্রয়োজন পড়তে পারে তাই কিনে নিয়ে গেলাম। মিরপুরে-১১ নম্বর বাসস্ট্যান্ডের কাছে তার দোকান রয়েছে বলে তিনি জানান। এদিকে বসন্ত ও ভালোবাসা দিবসে রাজধানীর অভিজাত মিষ্টি দোকানেও ক্রেতাদের ভিড় বেড়েছে। বিশেষ করে রস, মরণচাঁদ, আলাউদ্দিন, বিক্রমপুর, বোম্বে সুইটস, কুমিল্লার মাতৃভাণ্ডার, বগুড়ার মিষ্টি ও দই আকর্ষণীয় বিধায় এ সংশ্লিষ্ট মিষ্টি দোকানে প্রচুর বিক্রি হচ্ছে। |