শিরোনাম: |
নাসিক নির্বাচনে পরাজয় তোপের মুখে গয়েশ্বর
|
এম. উমর ফারুক : নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশন নির্বাচনে চরম ভরাডুবি নিয়ে এবারও তোপের মুখে পড়েছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায়। গত বুধবার দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে বিএনপির মনোনীত প্রার্থীর পরাজয়ের কারণ অনুসন্ধানে আয়োজিত বৈঠকে তিনি এ তোপের মুখে পড়েন বলে জানা গেছে। এ সময় নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপির প্রভাবশালী তিন নেতাসহ সিটি করপোরেশন নির্বাচনের বিভিন্ন দায়িত্ব থাকা নেতারা এবং মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর উপস্থিত ছিলেন। কেন্দ্রীয় নেতাদের মধ্যে চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আবুল খায়ের, ঢাকা বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক ফজলুল হক মিলন, যুগ্ম মহাসচিব মুজিবুর রহমান সারোয়ার, অ্যাডভোকেট মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল।
অন্যদিকে নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপির মধ্যে উপস্থিত ছিলেন, জেলা বিএনপির সভাপতি অ্যাডভোকেট তৈমুর আলম খন্দকার, সাধারণ সম্পাদক কাজী মনিরুজ্জামন, সহ সভাপতি শাহ আলম, সাবেক এমপি গিয়াসউদ্দিন, আবুল কালাম, মহানগর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক এটিএম কামাল, নাসিক নির্বাচনে দলের পরাজিত প্রার্থী সাখাওয়াত হোসেন খানসহ আরও অনেকে। বৈঠকে উপস্থিত একজন নেতা জানান, নরায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশন নির্বাচনের মূল সমন্বয়কারী হিসেবে গয়েশ্বর চন্দ্র রায় দায়িত্বে ছিলেন। কিন্তু তিনি তার কার্যক্রম যথাযথভাবে সম্পন্ন করেননি বলেই তার ওপর ক্ষোভ প্রকাশ করেন ওইসব নেতারা। তারা বলেন, নির্বাচনে সবাইকে সমন্বয় না করে তিনি খবরদারির ভূমিকায় ছিলেন। যাকে ইচ্ছা বকঝকা করতেন, হুমকি দিতেন। এমনকি নির্বাচনী এলাকায় তেমন সময়ও দিতেন না। যতটুকু সময় তিনি জেলায় অবস্থান করতেন ততক্ষণ তিনি একটি বলয়ের মাঝেই নিজেকে সীমাবদ্ধ রাখতেন। তৃণমূল নেতাকর্মীদের সঙ্গে তিনি কোনো বৈঠক করেননি। এছাড়া দলের প্রার্থী বাছাইয়ে তার ভূমিকা নিয়ে সমালোচনাও মুখর হয়ে ওঠে নারায়ণগঞ্জ জেলার প্রভাবশালী তিন নেতা। বিএনপি সূত্র জানায়, নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশন নির্বাচনে দলের প্রার্থীর অভাবনীয় ভরাডুবির কারণ অনুসন্ধানে চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলামকে দায়িত্ব প্রদান করেন। এর অংশ হিসেবে তিনি গত মঙ্গলবার এ নিয়ে বৈঠকও আহ্বান করেন। কিন্তু ওইদিন ক্ষমতাসীন দলের একটি রাজনৈতিক কর্মসূচি থাকায় তা বাতিল করে বুধবার বৈঠকের দিনক্ষণ নির্ধারণ করেন। বৈঠকে গয়েশ্বর চন্দ্র রায়ের একটি বক্তব্যের জের ধরে জেলার নেতারা ক্ষোভ প্রকাশ করেন। গয়েশ্বর চন্দ্র রায় নাসিক নির্বাচনে ভরাডুবির পর জেলার কমিটিতে রদবদলের হুমকি দিয়েছিলেন। এর পরিপ্রেক্ষিতে জেলার নেতারা এক ধরনের কৈফিয়ত জানতে চান। এ সময়ে গয়েশ্বর অনেকটা নরম সুরে আগের বক্তব্য থেকে পিছুটান দিয়ে নবীন-প্রবীণের সমন্বয়ে জেলা ও মহানগর কমিটির পক্ষে নিজের মত প্রকাশ করেন। এরপর নাসিক নির্বাচন নিয়ে নানাবিধ আলোচনা করেন নেতারা। নাসিক নির্বাচন নিয়ে সাখাওয়াত হোসেন খান জেলার প্রভাবশালী নেতাদের দিকে ইঙ্গিত করে বলেন, নির্বাচনে তৃণমূল নেতাকর্মীরা আমার সঙ্গে থাকলেও দায়িত্বশীল নেতারা ছিলেন না। সাবেক এমপি আবুল কালাম বলেন, ২০১১ সালের নাসিক নির্বাচনে আমাকে প্রধান নির্বাচন সমন্বয়কারী বানানো হয়েছিল। কিন্তু এবার আমাকে শুধুমাত্র বন্দরকেন্দ্রিক দায়িত্ব দেয়া হয়েছে। এরপরও সাখাওয়াত হোসেন আমাদের অতীত অভিজ্ঞতাকে কাজে লাগাতে পারেননি। তিনি আমাদের কাছে আসেননি। অপরদিকে নির্বাচনের শুরু থেকেই আমাদের কয়েকজনের বিরুদ্ধে নানা অপবাদ দেয়া হয়েছে, চরিত্র হনন করার চেষ্টা করেছে, আমাদের ছোট করা হয়েছে, অপমান করা হয়েছে। এরপরও আমরা প্রার্থীর জন্য কাজ করেছি। বন্দর উপজেলা চেয়ারম্যান আতউর রহমান মুকুল বলেন, আমাদের প্রার্থী স্থানীয় না হওয়ায় এবং রাজনৈতিকভাবে গ্রহণযোগ্যতা ছিল না বলেই পরাজিত হয়েছে। মাঠে পরিচিতি থাকলে অন্যকিছু হতে পারত। |