শিরোনাম: |
ছাত্রদল কমিটির মেয়াদ শেষ আজ
নতুন কমিটিতে পদপ্রত্যাশীদের দৌড়ঝাঁপ
|
এম.উমর ফারুক: খসড়া গঠনতন্ত্র মতে জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের বর্তমান কমিটির মেয়াদ শেষ হচ্ছে শুক্রবার। দু’বছর মেয়াদী এ কমিটি আন্দোলন সংগ্রামে সফল হলেও সাংগঠনিক কর্মকান্ডে চরমভাবে ব্যর্থ হয়েছে। সংগঠনটির সারাদেশের মেয়াদোত্তীর্ণ কমিটি গুলো ভেঙে করতে পারেনি নতুন কমিটি। শুরু থেকে ৪০ টি কমিটির নিয়ে কাজ করলেও দুই বছর মেয়াদেও তা ঘোষণা করতে পারেনি। কবে নাগাদ ঘোষনা করবে তা সুস্পস্ট করতে পারেনি সংগঠনের সাধারন সম্পাদক আকরাম হাসান। তবে, কমিটির মেয়াদ শেষ হওয়ায় নতুন কমিটি গঠনের প্রক্রিয়া নিয়ে ভাবতে শুরু করেছে দলটির হাইকমান্ড। আর নতুন কমিটিতে কাঙ্খিত পদ পেতে ইতোমধ্যে সম্ভাব্যপদ প্রত্যাশীরা দৌড়-ঝাঁপ করছেন দায়িত্বশীল নেতাদের কাছে।
এবিষয়ে ছাত্রদলের সাধারন সম্পাদক আকরাম হাসান বলেন, কাগজে কলমে মেয়াদ শেষ হলো। এখন ছাত্রদলের সাংগঠনিক নেত্রী ও বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া নতুন কমিটির বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবেন। আমরা খালেদা জিয়ার নির্দেশে কাজ চালিয়ে যাচ্ছি। ৪০ টি ইউনিটের নতুন কমিটির কাজ প্রায় শেষ করেছি। যেকোন সময় এ কমিটি ঘোষণা দেওয়া হবে। সূত্র জানায়, বিএনপির অঙ্গসংগঠনের মধ্যে শুধু মহিলা দল ছাড়া সবগুলোর মেয়াদোত্তীর্ণ হয়েছে। ওই সহযোগী সংগঠন গুলোর কমিটি নিয়ে চলছে নানা হিসাব নিকাশ। তাই ছাত্রদলের কমিটি দ্রুত নাও হতে পারে। তবে, দলের একাধিক সিনিয়র নেতার সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, পূর্বের কোন নিয়মের সাথে এবারের নিয়মরে মিল থাকবে না। ছাত্রদলের কমিটি দেরী করে দিলেই বরং বড় আকারের সমস্যা হবে। কেননা ছাত্রদলের মধ্যে অনেক সেসন জট আছে। তাই ছাত্রদলের কমিটি দ্রুত দেওয়ার পর পদবঞ্চিত যোগ্য ত্যাগী নেতাদের অন্য অঙ্গসংগঠনের দায়িত্ব দেওয়া যাবে। তাহলে দলের ভিতরে নেতৃত্বের আর কোন দ্বন্দ থাকবে না। এ কারনেই ছাত্রদলের কমিটি দ্রুত হতে পারে বলে তারা মন্তব্য করেছেন। ২০১৪ সালের ১৪ অক্টোবর রাজীব আহসানকে সভাপতি ও মো. আকরামুল হাসানকে সাধারণ সম্পাদক করে ১৫৩ সদস্যের আংশিক কমিটি ঘোষণা করা হয়। এরপর চলতি বছরের ৬ ফেব্রুয়ারি ৭৩৪ জন সদস্যকে নিয়ে ওই কমিটি পূর্ণাঙ্গ রূপ পায়। কিন্তু ২০১৫ সালের সরকার বিরোধী আন্দোলনে ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় কমিটির ১৫৩ সদস্যের মধ্যে মাত্র ২০ থেকে ২৫ জন ছাত্রনেতা সক্রিয় ছিলেন। এর বাইরে পদ-পদবী বিহীন অনেক ছাত্রনেতার ভূমিকাও ছিলো উল্লেখযোগ্য। জানা গেছে, বিগত আন্দোলনে সক্রিয় নেতাদের মধ্য থেকেই এবার নতুন কমিটির দায়িত্ব প্রদান করার দাবি জানানো হয়েছে দলের হাইকমান্ডের কাছে। কোন সিন্ডিকেট এর তল্পিবাহক কিংবা ভাইয়া গ্রুপের আশীর্বাদপুষ্ট নেতাকে পদায়ন দেয়া হলে এর বিরুপ প্রভাব পড়বে পুরো দলের ওপর। সুত্রটি আরো জানায়, ছাত্রদল কমিটি নিয়ে আলোচনা শুরুর পর থেকেই চিহ্নিত একটি অংশ বিবাহিত, অবিবাহিত, বয়স্ক, তরুন এরকম নানাবিধ যুক্তি-তর্ক উপস্থাপন শুরু করেছে। মাঠের আন্দোলনে অংশগ্রহন না থাকলেও বিতর্কিত ইস্যু নিয়ে সরব হয়ে উঠছেন ওই অংশটি। কিন্তু ছাত্রদলের খসড়া গঠণতন্ত্রে বিবাহিত অবিবাহিত শব্দটি কোথাও নেই। সূত্র জানায়, নতুন কমিটির সভাপতি পদের জন্য বর্তমান কমিটির সাধারন সম্পাদক আকরামুল হাসান মিন্টু, সিনিয়র সহ সভাপতি মামুন অর রশিদ মামুন, সাংগঠনিক সম্পাদক ইসহাকসহ আরো অনেক হেভিওয়েট প্রার্থী রয়েছেন। এরপর সহ-সভাপতি থেকে সভাপতি প্রাথী হিসেবে আলোচনায় রয়েছেন সহ সভাপতি আলমগীর হাসান সোহান। সহ সভাপতি নাজমুল হাসান, ইখতিয়ার রহমান কবির, আবু আতিক আল হাসান মিন্টু, মনিরুল ইসলাম মনির ও মামুন বিল্লাহ। সাধারন সম্পাদকের পদ প্রত্যাশী হিসেবে রয়েছেন, যুগ্ম সম্পাদক আসাদুজ্জামান আসাদ, মিজানুর রহমান সোহাগ বায়েজিদ আরেফিন, মফিজুর রহমান আশিক, কাজি মোখতার হোসাইন, সামছুল আলম রানা, করিম সরকার, হাসানুল বান্না, মেহবুব মাসুম শান্ত, রাজিব আহসান চৌধূরী পাপ্পুসহ আরো অনেকে। এর মধ্যে জুনিয়র পর্যায়ের কমিটি গঠন হলে কয়েকজন যুগ্ম সম্পাদক সভাপতি পদের জন্যও চেষ্টা তদবীর করছেন বলে জানা গেছে। এর মধ্যে মফিজুর রহমান আশিক ছিলেন দুই মাসের গুমের তালিকায়। আবার রাজপথের আন্দোলনে সমান অংশগ্রহনসহ দলের প্রয়োজনে কাজি মোখতার হোসাইন জীবন-মৃত্যুর সন্ধিক্ষন থেকে ফিরে এসেছেন। জীবনের ঝুকি নিয়ে বার বার মিছিলও করেছেন। এর বাইরে সুপার টুয়ে এবার পদ প্রত্যাশি জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রদল। বিগত সময়ে পুরনো ঢাকার এই বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রদল বিশেষ ভূমিকা পালন করে আসছে। এদের মধ্যে কেন্দ্রীয় যুগ্ম সম্পাদক ও জবি’র সাবেক সাধারন সম্পাদক ওমর ফারুক মুন্না, জবির অ্যাকাউন্টিং অ্যান্ড ইনফরমেশন সিস্টেমস বিভাগের ছাত্র মো. আসাদুজ্জামান মিয়া এবার সাধারণ সম্পাদক পদ প্রত্যাশি। আন্দোলনে জবি ছাত্রদল বড় ভূমিকা রাখছেন আসাদুজ্জামান মিয়া। এছাড়াও নতুন কমিটিতে পদ-পদবী পাওয়ার জন্য নিজের প্রচারনা চালাচ্ছে অসংখ্য ছাত্রনেতা। রাজপথের আন্দোলন সংগ্রামে তো দুরের কথা ঘরোয়া প্রগ্রামেরও তাদের দেখা মেলেনি। কিন্তু ফেসবুক আর সামাজিক যোগাযোগের বিভিন্ন মাধ্যমের কল্যানে প্রচার চালাচ্ছেন তারা। |