করোনার দ্বিতীয় ঢেউ শুরু হয়ে গেছে : স্বাস্থ্যমন্ত্রী
Published : Thursday, 24 September, 2020 at 1:33 PM, Count : 33295

বর্তমান প্রতিবেদক : স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক বলেছেন, দেশে করোনাভাইরাস সংক্রমণের সেকেন্ড ওয়েভ (দ্বিতীয় ঢেউ) শুরু হয়ে গেছে। তিনি বলেন, জীবন ও জীবিকার তাগিদে মানুষ ঘরের বাইরে বের হচ্ছে। স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলায় উদাসীনতা লক্ষ্য করা যাচ্ছে। তবে সেকেন্ড ওয়েভ মোকাবিলায় চিকিৎসক-নার্সসহ স্বাস্থ্যবিভাগ প্রস্তুত। গতকাল বুধবার জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী উপলক্ষে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালের আধুনিকায়ন, উন্নতমানের চিকিৎসাসেবা এবং শিক্ষার সম্প্রসারণমূলক কাজের উদ্বোধনী অনুানে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় মন্ত্রী এসব কথা বলেন। স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক বলেন, শীতকালে বিয়ে ও পিকনিকসহ নানা অনুান হয়। জনসমাগম বেশি হওয়ায় করোনার সংক্রমণ বাড়ার আশঙ্কা রয়েছে। এ কারণে এসব অনুানের আয়োজন থেকে বিরত থাকতে হবে। এ সময় জনগণকে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলা ও গণমাধ্যমকে এগিয়ে আসার আহ্বান জানান মন্ত্রী। গতকাল বুধবার দুপুরে স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ২৩টি সম্প্রসারণমূলক কাজের নামফলক উন্মচন করে এর শুভ উদ্বোধন ঘোষণা করেন। সম্প্রসারণমূলক কার্যক্রমের মধ্যে রয়েছে-২০ শয্যাবিশিষ্ট জেরিয়াট্রিক ওয়ার্ড (পুরুষ ও মহিলা), ৭০ শয্যাবিশিষ্ট সিবিআরএন (কেমিক্যাল, বায়োলজিক্যাল, রেডিয়েশন অ্যান্ড নিউক্লিয়ার অ্যান্ড ম্যাস কজাল্টি ম্যানেজমেন্ট সেন্টার), স্পেশালাইজড পেডিয়াট্রিক ওয়ার্ড ও এইচডিইউ, পেডিয়াট্রিক এন্ডোসকপি, কলানস্কপি ও ইকোকার্ডিওগ্রাম, আলট্রাসাউন্ড সেন্টার, ১৫ শয্যার পেডিয়াট্রিক সার্জারি ইউনিট, পেডিয়াট্রিক আইসিইউ, পেডিয়াট্রিক ডায়ালাইসিস ইউনিট, শিশু ডায়াবেটিক ক্লিনিক, নিউবোক্যাথ অপারেশন থিয়েটার, ইনফারলিটি অ্যান্ড আইভিএফ সেন্টার, কক্লিয়ার ইমপ্ল্যান্ট ওটি এবং এন্ডোসকপি সার্জারি ওটি, প্রসিডিউর রম, প্লাজমা থেরাপি সেন্টার, আরটি-পিসিআর ও জিন এক্সপার্ট মেশিন স্থাপন, সিটি সিমুলেটর ও এক্স-রে মেশিন, কার্ডিয়াক সেমিনার কক্ষ ও লাইব্রেরি, নিউরো সার্জারি ও অর্থোপেডিক্স সার্জারি সেমিনার কক্ষ, ইমার্জেন্সি কমপ্লেক্স আধুনিকায়ন, হাসপাতাল সেন্ট্রাল সাউন্ড সিস্টেম, সেন্ট্রাল অটোমেশন সিস্টেম (আংশিক), হাসপাতালে যানবাহন এলাকার সম্প্রসারণ ও সংস্কার, হাসপাতাল ইনসিডেন্ট কমান্ড সিস্টেম, ওয়ারলেস কমিউনিকেশন সিস্টেম (সিকিউরিটি পারসন), আনসার ব্যারাক, আউটডোর কমপ্লেক্স সম্প্রসারণ (নির্মাণাধীন)। স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, অনেক আগেই ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে ইউনিটগুলো স্থাপনের উদ্যোগ নিয়েছিলাম। কিন্তু ডেঙ্গু ও করোনা ভাইরাসের কারণে আটকে গিয়েছিলো। মুজিববর্ষে এ ২৩টি নতুন ইউনিট উদ্বোধন করতে পেরে আমি আনন্দিত। এজন্য প্রধানমন্ত্রীসহ সংশ্লিষ্ট সবাইকে আন্তরিক ধন্যবাদ জানাই। প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশ ও অনুপ্রেরণায় এটি সম্ভব হয়েছে। তার চেষ্টায় এগিয়ে যাচ্ছে স্বাস্থ্যসেবা। উদ্বোধনী অনুানে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. এ বি এম খুরশীদ আলম, অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. আবু ইউসুফ ফকির, ঢামেক হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল এ কে এম নাসির উদ্দিন, ঢাকা মেডিকেল কলেজের অধ্যক্ষ অধ্যাপক ডা. খান আবুল কালাম আজাদসহ অনেকে উপস্থিত ছিলেন। স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, ঢাকা মেডিকেল একটি ঐতিহ্যবাহী হাসপাতাল। দেশের অন্যতম মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতাল এটি। আজকে এখানে ২৩টি ইউনিট একসঙ্গে উদ্বোধন করতে পেরে আমি আনন্দিত। এজন্য শুকরিয়া জ্ঞাপন করছি। যারা এর পেছনে শ্রম দিয়েছেন তাদের ধন্যবাদ জানাই। এ ইউনিটগুলোর জন্য হাসপাতালটি আরও সমৃদ্ধ হয়েছে। এরফলে রোগীদের আরও ভালো সেবা দিতে পারবে। জাহিদ মালেক বলেন, এরইমধ্যে ঢাকা মেডিকেল পাঁচ হাজার বেডে উন্নতিকরণের কাজও শুরু হয়েছে। করোনা ভাইরাসের জন্য দেশে ১৫ থেকে ২০ হাজার করোনা বেড করা হয়েছিলো, এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি বেড ছিলো ঢাকা মেডিকেলে এবং এখানে সেবাও বেশি পেয়েছেন রোগীরা। এতো জনবহুল দেশ হয়েও করোনা রোগীদের চিকিৎসায় বাংলাদেশ একটি উদাহরণ সৃষ্টি করেছে। বলা হয়েছিলো, সেপ্টেম্বরে আমাদের দেশে হাজার হাজার রোগী মারা যাবে। কিন্তু আমাদের চিকিৎসা ব্যবস্থার জন্য এমন কিছুই হয়নি। আমাদের দেশে করোনা রোগীর সুস্থ্যতার হার ৭৫ শতাংশ। করোনা আক্রান্ত কোনো রোগী সেবা পায়নি এমন কোনো নজর নেই। বাইরের দেশের মতো কোনো রোগীকে তাঁবুতে থাকতে হয়নি। আমার দেশের চিকিৎসা প্রটোকল বিশ্বমানের হওয়ায় হাজার হাজার লোক বেঁচে গেছেন। তাই চিকিৎসক, নার্সসহ সবাইকে আন্তরিক ধন্যবাদ। সবার প্রচেষ্টায় এ অর্জন সম্ভব হয়েছে। ভ্যাকসিনের বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনা করছেন। যে দেশের ভ্যাকসিন সব চেয়ে ভালো ও কার্যকর হবে আমরা সেই দেশ থেকেই ভ্যাকসিন আনবো। তিনি বলেন, দ্বিতীয় ধাপে অনেক দেশে করোনা ঝুঁকি বাড়ছে। আমাদের দেশে অনেক লোক এখন স্বাস্থ্যবিধি না মেনেই চলাফেরা করছেন। কিন্তু আমাদের সজাগ থাকতে হবে। দ্বিতীয ধাপের করোনা ঝুঁকির জন্য অগ্রিম প্রস্তুতি নিতে হবে। প্রধানমন্ত্রী স্বাস্থ্যসেবায় সন্তুষ্ট প্রকাশ করেছেন। শীতের সময়ে আরও বেশি সতর্ক হতে হবে। এসময়েই বেশি সামাজিক অনুান হয়। যেখানে করোনা ঝুঁকি বাড়তে পারে। সেদিকে আমাদের খেয়াল রাখতে হবে। সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, লকডাইন একটি জাতীয় পর্যায়ের সিদ্ধান্ত। ফের লকডাউনের বিষয়ে এখনও কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি। স্বাস্থ্যখাতে দুর্নীতির বিষয়ে প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, স্বাস্থ্যখাতে যেখানে দুর্নীতি, সেখানেই ব্যবস্থা নিচ্ছি।



« পূর্ববর্তী সংবাদপরবর্তী সংবাদ »


সর্বশেষ সংবাদ
সর্বাধিক পঠিত
সম্পাদক ও প্রকাশক: আলহাজ্ব মিজানুর রহমান, উপদেষ্টা সম্পাদক: এ. কে. এম জায়েদ হোসেন খান, নির্বাহী সম্পাদক: নাজমূল হক সরকার।
সম্পাদক ও প্রকাশক কর্তৃক শরীয়তপুর প্রিন্টিং প্রেস, ২৩৪ ফকিরাপুল, ঢাকা থেকে মুদ্রিত।
সম্পাদকীয় ও বাণিজ্যিক কার্যালয় : মুন গ্রুপ, লেভেল-১৭, সানমুন স্টার টাওয়ার ৩৭ দিলকুশা বাণিজ্যিক এলাকা, ঢাকা-১০০০ থেকে মুদ্রিত।, ফোন: ০২-৯৫৮৪১২৪-৫, ফ্যাক্স: ৯৫৮৪১২৩
ওয়েবসাইট : www.dailybartoman.com ই-মেইল : [email protected], [email protected]
Developed & Maintainance by i2soft