শিরোনাম: |
জেরুজালেম ঘোষণা
পুতিন-এরদোগানের সতর্কতা
|
বর্তমান ডেস্ক : সম্প্রতি তুরস্কে একটি সংক্ষিপ্ত সফর করেছেন রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। একদিনের ওই সফরে তিনি তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়েপ এরদোগানের সঙ্গে সাক্ষাত্ করেছেন। ওই সাক্ষাতে জেরুজালেমকে ইসরাইলের রাজধানী হিসেবে ঘোষণা দেয়ায় যুক্তরাষ্ট্রের সিদ্ধান্তের নিন্দা ও সমালোচনা করা হয়। খবর আল জাজিরা। সোমবার আঙ্কারায় পা রাখার আগে অর্থাত্ এরদোগানের সঙ্গে সফরের আগে পুতিন অনির্ধারিত সফরে সিরিয়া যান। সেখানে তিনি রাশিয়ার সেনাপ্রধান এবং প্রতিরক্ষামন্ত্রীকে দেশটি থেকে সেনাবাহিনী সরিয়ে নেয়ার নির্দেশ দেন। ইতোমধ্যেই বেশ কিছু সৈন্যকে সরিয়ে নেয়া হয়েছে। সোমবার প্রতিরক্ষামন্ত্রী সেরগেই সইগু এক বিবৃতিতে এ তথ্য জানিয়েছেন। সিরিয়ায় রাশিয়ার ঘাঁটিতে অঘোষিত এক সফরে গিয়ে সেনা সরিয়ে নেয়ার নির্দেশ দেন রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। স্থানীয় সময় সোমবার সকালে লাটাকিয়ার দক্ষিণ-পূর্ব এলাকার বিমান ঘাঁটিতে পুতিনের সঙ্গে সাক্ষাত্ করেন সিরিয়ার প্রেসিডেন্ট বাশার আল আসাদ। মিসরের প্রেসিডেন্ট আবদেল ফাত্তাহ আল সিসির সঙ্গেও বৈঠকের পরিকল্পনা রয়েছে পুতিনে। বিশ্লেষকরা বলছেন, মধ্যপ্রাচ্যে মিত্র দেশগুলোর সঙ্গে সম্পর্ক জোরদার করতেই এই আকস্মিক সফর করেছেন রুশ প্রেসিডেন্ট। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প জেরুজালেমকে ইসরাইলের রাজধানী হিসেবে ঘোষণার পর থেকেই বিশ্বজুড়ে তীব্র নিন্দা ও ক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে। বিশ্বের মুসলিমদেশগুলোসহ বিভিন্ন স্থানে বিক্ষোভ হয়েছে। এই ঘোষণার ফলে ইসরাইল ও ফিলিস্তিনের মধ্যে নতুন করে উত্তেজনা শুরু হয়েছে। গত ছয়দিন ধরেই এই সহিংসতা চলছে। এসব সহিংসতার ঘটনায় গাজা উপত্যকায় কমপক্ষে চার ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছে। অপরদিকে, জেরুজালেমে একটি বাস স্টেশনে এক ইসরাইলি সেনাকে ছুড়িকাঘাতের ঘটনায় এক ফিলিস্তিনিকে আটক করা হয়েছে। এমনকি যুক্তরাষ্ট্রের মিত্র দেশগুলোও এই ঘটনার বিরোধীতা করেছে। এদিকে, জেরুজালেমকে ইসরাইলের রাজধানী হিসেবে মার্কিন প্রেসিডেন্ট যে ঘোষণা দিয়েছেন তাতে ইউরোপীয় ইউনিয়নের সমর্থন প্রত্যাশা করেন ইসরাইলের প্রধানমন্ত্রী বেনজামিন নেতানিয়াহু। কিন্তু ইউরোপীয় ইউনিয়নের পররাষ্ট্রনীতিবিষয়ক প্রধান ফেডেরিকা মোগেরিনি সাফ জানিয়ে দিয়েছেন, জেরুজালেমের ব্যাপারে তাদের আগের সিদ্ধান্তই বহাল থাকবে। ট্রাম্পের এমন সিদ্ধান্তের কারণে এশিয়া, মধ্যপ্রাচ্য, উত্তর আফ্রিকার বিভিন্ন দেশে ক্ষোভ ছড়িয়ে পড়েছে। এমন বিতর্কিত সিদ্ধান্তের সমালোচনা করে হাজার হাজার মানুষ বিক্ষোভে অংশ নিয়েছেন। আঙ্কারায় এরদোগানের সঙ্গে বৈঠকে পুতিন বলেন, ফিলিস্তিন এবং ইসরাইলের মধ্যে কথা বলেই জেরুজালেমের অবস্থান নির্ধারণ করতে হবে। এক সংবাদ সম্মেলনে পুতিন বলেন, রাশিয়া এবং তুরস্ক উভয়ই মনে করে জেরুজালেমকে ইসরাইলের রাজধানী হিসেবে যুক্তরাষ্ট্রের ঘোষণা মধ্যপ্রাচ্যে শান্তি প্রতিষ্ঠায় কোনো কাজেই আসবে না। বরং তা শান্তি প্রক্রিয়ার ক্ষেত্রে বাধা দেবে। তিনি আরও বলেন, এর ফলে ওই অঞ্চল অস্থিতিশীল হয়ে উঠেছে এবং শান্তি প্রত্যাশা বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। এরদোগান জানিয়েছেন, জেরুজালেম ইস্যুতে পুতিনের অবস্থানে তিনি সন্তুষ্ট। একই সঙ্গে ট্রাম্পের পরিকল্পণা বাস্তবায়নে বিরোধিতা করে বিক্ষোভে অংশ নেয়া ফিলিস্তিনিদের মৃত্যুর ঘটনায় তিনি ইসরাইলের প্রতি নিন্দা জানিয়েছেন। ভবিষ্যত ফিলিস্তিন রাষ্ট্রের রাজধানী হিসেবে জেরুজালেমকে দেখতে চায় ফিলিস্তিনিরা। কিন্তু ট্রাম্পের সিদ্ধান্তের কারণে হুট করেই জেরুজালেমকে ইসরাইলের রাজধানী হিসেবে ঘোষণা দেয়া হলো। |